​যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার হচ্ছে আরও ৮৬ বাংলাদেশি

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০১৬, ১৪:০১

সাহস ডেস্ক

৮৬ বাংলাদেশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেআইনি পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় মার্কিন সীমান্ত রক্ষী কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়ে দু’বছরের বেশি সময় অভিবাসন দফতরের ডিটেনশন সেন্টারে থাকার পর এদেরকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছে। 

‘ইউএস ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’ তথা আইসের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, ‘এসব বাংলাদেশির সবাই রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু সে আবেদনের সমর্থনে কোন প্রমাণাদি প্রদর্শনে সক্ষম হননি কেউই।

অর্থাৎ তারা কেউই বিএনপির কর্মী / সমর্থক হিসেবে ক্ষমতানীর সরকারের নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার বলে অভিবাসন দপ্তরকে কনভিন্স করতে সক্ষম হননি। 

আইস কর্মকর্তারা জানান, ‘ইতোপূর্বে যাদেরকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়, তারা কেউই সরকারের রোষানলে পড়েনি কিংবা এয়ারপোর্ট থেকে নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছার সময়েও কোন হামলা/নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানা যায়নি। অর্থাৎ তারা যে সব যুক্তি দেখিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন, তা সঠিক ছিল না।’

অপরদিকে, ইউএস সিআইএস-এর পক্ষ থেকে জানা গেছে, রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীদের মধ্যে যারা যথাযথ ডক্যুমেন্ট প্রদর্শনে সক্ষম হয়েছেন তাদেরকে জামিনে মুক্তি দেয়ার পর ‘ওয়ার্ক পারমিট’ ইস্যু করা হয়েছে। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই গ্রিনকার্ড প্রাপ্তির অনুমতিও পেয়েছেন। 

ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে এনআরবি নিউজ জানতে পেরেছে যে, ৮৬ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পত্র পাঠিয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। ওই পত্রে চার্টার্ড বিমানে করে দুই ট্রিপে ওই ৮৬ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এদেরকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের চূড়ান্ত আদেশ জারি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ তালিকা উপযুক্ত নথিপত্র সহ ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে জমা দিয়েছে। পাশাপাশি ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করতেও অনুরোধ করেছিল মার্কিন সরকার। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছে চলতি মাসেই দুটি ফ্লাইটে এদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে। তবে আগে থেকেই যারা অবৈধভাবে বসবাস করছেন, তারা এ তালিকার অন্তর্ভুক্ত নয়। 

বহিষ্কারের অপেক্ষায় থাকা তালিকাটি এখানে দেয়া হলো : হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ উদ্দিন, মো.আলম, সোহরাব হোসেন, মো.মোহসিন, বাচ্চু মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, মোজাম্মেল হোসেন, গাজী কবির, আহম্মদ রুমন, আবুল কাশেম, মো.রহমান, এনামুল ইসলাম, মো.শিপন আহম্মেদ চৌধুরী, আবু বক্কর, মো.আজিজুর রহমান, রিপেন নজরুল, জাহিদুর রহমান, সাবুল হাসাইন, সৌরভ দেব, বিবেক কান্তি দাস, আব্দুল মাসুদ, সাব্বির আহমেদ, জয়নাল আবেদীন, মামুন আলম, মোহাম্মদ শাহাদত, হেলাল উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, মনিরুল মুন্না, বি.হুসাইন, মো.আরাফাত, তাজুল ইসলাম, সোহরাব হোসেন, সামসুদ্দিন, আব্দুর রহীম, মোহাম্মদ ইসলাম, আকতার হুসেইন, শাহীন আহম্মেদ, নাসির উদ্দিন, ফারুক আহমদ, মোহাম্মদ রহিম, মোহাম্মদ সোহেল, আহমদ শেখ সিব্বিন, শিব্বির আহমদ, আব্দুর রহমান, মোহাম্মদ ইব্রাহীম, মোহাম্মদ ইসলাম, মো.ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, জাহেদ আহমদ, আবু সাঈদ, মোহাম্মদ ভূঁইয়া, হাসান মোহাম্মদ, শরিফুল হাসান, মো.ওহিদুর রহমান, মোহাম্মদ উদ্দিন, এনায়েত করিম, রিপন সর্দার, ফয়েজ মোল্লাহ, আব্দুস সামাদ, বশির বাবু, মোহাম্মদ হুদা, মোহাম্মদ রহমান, মাইনুল ইসলাম, অহিদুল ইসলাম, সুলতানুল আরফিন, মিনহাজুর রহমান, হুমায়ুন কবির, নাসের এম. ডাবু, আব্দুল রহমান, মোহাম্মদ ইসলাম, মামুনুর রশীদ, রুহুল আমিন, কালু চৌধুরী, নূরল আলম, শরীফ উল্লাহ, মালিক খসরু, আকরাম হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ আল আমিন, অসীম চন্দ্র দাস, আসাদুল সিদ্দিকী, মিল্টন রোজারিও, ইকবাল হোসেন ও মো.শফিকুল আলম। 

মার্কিন প্রশাসনের কাছে এদের ঠিকানা নিয়ে সন্দেহ-সংশয় থাকলেও অধিকাংশই সিলেট ও নোয়াখালী অঞ্চলের বলে জানা গেছে। সকলেরই বয়স ২৮ বছরের নিচে। সকলেই উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি পাশ বলেও শোনা গেছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত