নিউ ইয়র্কে ২ বাংলাদেশি সন্ত্রাসী হামলার শিকার

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১১:৩৫

সাহস ডেস্ক

মাত্র একদিনের ব্যবধানে নিউ ইয়র্কে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি। এদের একজন মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলমের (৭২) অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। তাকে এলমহার্স্ট হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আহত অন্যজন খবির উদ্দিন ভূইয়া (৫৮) চিকিৎসা নিয়ে বাসায় বিশ্রামে রয়েছেন। তার আঘাত অতটা মারাত্মক নয়।

কুইন্সের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যামাইকা এবং ব্রঙ্কসের ক্যাসেলহিলে ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তারা দুর্বৃত্তের কবলে পড়েন বলে স্থানীয় বাংলাদেশিরা জানিয়েছে।

স্বজনরা জানান, খবিরউদ্দিনের কাছে থেকে কোনো কিছু না নিলেও শাহ আলমের মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়েছে হামলাকারীরা।

উভয় ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা নাগাদ কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও অপরাধীদের চিহ্নিত করতে চেষ্টা চলছে বলে নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে। এই দুই হামলার কারণে সন্ধ্যার পর নির্জন স্থান দিয়ে চলাচলে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন প্রবাস বাংলাদেশি নেতারা।

৫ বছর আগে অভিবাসন মর্যাদায় স্ত্রী ও ১৩ বছর বয়েসী মেয়ে নোভাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম। বছর দুয়েক আগে তার স্ত্রীর ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে সঙ্কটে থাকার মধ্যেই শাহ আলমের উপর হামলা হল।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৮টায় জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউ থেকে বাসায় ফেরার পথে কৃষ্ণাঙ্গ কয়েক দুর্বৃত্ত শাহ আলমের উপর হামলা চালায়। তার ঘাড় এবং মাথার পেছনে প্রচণ্ড আঘাত করা হয়।

দুর্বৃত্তরা রাস্তায় ফেলে চলে গেলে পুলিশ এসে তাকে অচেতন অবস্থায় কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত জ্ঞান না ফেরায় তাকে এলমহার্স্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

শাহ আলমের ভাতিজি ‘নারী উন্নয়ন শক্তি’র নির্বাহী পরিচালক আফরোজা পারভিন এখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন।

তিনি এলমহার্স্ট হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, তার চাচার একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। চিকিৎসকরা এখন তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। ৩/৪ দিন পর কিছু বলা যাবে। প্রয়োজনে আবার অস্ত্রোপচার লাগতে পারে।

নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, সম্ভবত ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছিলেন শাহ আলম। এটি ধর্মীয় অথবা জাতিগত বিদ্বেষমূলক কোনো হামলা নয়।

তবে এর ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ব্রঙ্কসের ক্যাসেলহিল সাবওয়ের অদূরে ক্যাসেলহিল এবং স্টার্লিং এভিনিউর কর্নারে মো. খবির উদ্দিনের উপর হামলা হওয়ায় বাংলাদেশিদের ধারণা, উদ্দেশ্যের দিক থেকে দুই হামলার মধ্যে যোগসূত্র আছে। 

স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় বাংলাবাজার এভিনিউতে একটি স্টোর থেকে কেনাকাটা করে বাসায় ফেরার পথে খবির উদ্দিনকে ৪/৫ জন যুবক এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে জখম করে।

তার চিৎকারে এক বাঙালি ট্যাক্সি ড্রাইভার সাহায্যে এগিয়ে আসেন এবং পুলিশকে ফোন করেন। এসময় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। 

খবির উদ্দিনের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। তিনি সপরিবারে দীর্ঘদিন ওই এলাকায় বসবাস করছেন।

স্থানীয় বাংলাদেশি নেতা মোহাম্মদ এন মজুমদার বলেন, এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের পাশাপাশি ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষমূলক হামলার ঘটনাও উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। নির্জন পথে চলাচলে সকলেরই সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত