শ্যামনগরে আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ

প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০১৭, ১৫:৪২

বরুণ ব্যানার্জী

সুন্দরবনের পাদদেশে মালঞ্চ নদীর কোলে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত উপজেলার নাম শ্যামনগর। এ উপজেলার সকল কর্মই যেন সুন্দরবনের সুন্দরের সাথে মিলেই তৈরি হয়েছে। লোনা

পানির সোনা খ্যাত চিংড়ি চাষ বহির্বিশ্বে পরিচয় ঘটিয়েছে এ উপজেলাকে। সত্তর দশক থেকে সাতক্ষীরা বাসীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের সাথে চিংড়ি সম্পদ বিশেষভাবে জড়িত।
বঙ্গোপসাগর থেকে চিংড়ি আহরণের পাশাপাশি সত্তর দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে প্রথম বৃহত্তর
খুলনা জেলায় বাগদা চিংড়ি চাষ শুরু হয়। তন্মধ্যে সর্বপ্রথম চিংড়ি চাষ শুরু হয় ততকালীন বৃহত্তর খুলনা জেলার অন্তর্গত বর্তমান সাতক্ষীরা জেলার সদর, দেবহাটা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর থানায়।

তখন থেকেই দেশীয় (সনাতন) পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ হয়ে আসছে। বর্তমান সময়ে যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে চিংড়ি চাষ সনাতন পদ্ধতিকে পেছনে ফেলে শ্যামনগরে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়িচাষ করে অধিক উৎপাদনে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা।

আধা নিবিড় ইংরেজিতে সেমি ইন্টেন্সি বলা হয়। যেহেতু ঘেরে চিংড়ি চাষের জন্য বেশি জমির প্রয়োজন হয়, সে কারণে নানা সমস্যা তৈরি হয়। প্রয়োজনীয় উপযোগী জমিরও অভাব রয়েছে। তাই স্বল্প জমিতে পুকুর কেটে এ পদ্ধতির চাষ বেশ সুবিধা ও লাভজনক। অল্প জমিতে অধিক উৎপাদনের ফলে দিন দিন এই চাষ পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। তবে সরকারি বেসরকারি সহায়তা পেলে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহারে আরো আগ্রহী হবেন চাষীরা। এই পদ্ধতির ফলে চিংড়ির উপযোগী গুণগত মান সম্পন্নের পাশাপাশি এ খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রযুক্তির মাধ্যমে অক্সিজেন, ঔষধ ও খাবার সরবরাহের কারণে সম্পূর্ণ ভাইরাসের ঝুঁকিমুক্ত হওয়ায় পদ্ধতিটি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

শ্যামনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসাইন সাগর বলেন, অল্প জমিতে অধিক মুনাফা  লাভের জন্য এই প্রযুক্তিরকোন বিকল্প নেই। প্রতিটি পুকুরে বছরে ২ বার মাছ ধরা যাবে। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক উপায়ে আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে অর্থাৎ যদি নিরোগ পোনা ছাড়া হয়, তাছাড়া ঘেরে পানির পরিমান ৩ থেকে ৪ ফুট, ভালো পানি, ভালো পরিবেশ, জৈব নিরাপত্তা, ভালো মানের খাদ্য, মাছের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এসব সব ঠিক থাকলে ৫ মাসে একর প্রতি ১০ লক্ষ টাকা পাওয়া সম্ভব, যেখানে খরচের পরিমান ৫ লক্ষ টাকা।

সনাতন পদ্ধতির অপেক্ষা আধা নিবিড় পদ্ধতিতে ১০ গুন মাছ উৎপাদন করা সম্ভব বলে তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত