ছাতকের মানিকপুরে লিচুর বাম্পার ফলন

প্রকাশ : ২১ মে ২০১৭, ১৩:১৬

নুর উদ্দিন

ছাতকের মানিকপুরে রসাল মিষ্টি ফল লিচু এখন ডালে ডালে ঝুলছে। সুস্বাদু লিচু উৎপাদনের উপর নির্ভর করে মানিকপুরসহ ৭-৮টি গ্রামের লিচু চাষীদের জীবন জীবিকা।

ছাতকের নোয়রাই ইউনিয়নের লিচুর গ্রাম হিসেবে পরিচিত মানিকপুরে লিচুর চাষাবাদ শুরু হয়েছিল সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই। জমিদাররা মানিক পুরে লিচু চাষাবাদ করে রেখে যাওয়া সেই পুরনো বড় বড় গাছগুলো আজও দাঁড়িয়ে আছে।

প্রতি বছর শত বছরের ওই গাছগুলো থেকে উৎপাদন হয় লাখ লাখ টাকার দেশীয় জাতের সুস্বাদু লিচু। জমিদারদের লিচু চাষের আগ্রহ থেকেই স্বাধীনতাত্তোর ওই গ্রামে কৃষকরা ব্যাপক হারে লিচু চাষাবাদ শুরু করেন। শুধু মানিক পুরেই কয়েকশ’ কৃষক পরিবার লিচু চাষ করছেন। এখানে এমন কোনো বসতবাড়ি ভিটা পাওয়া যাবে না যাদের বাড়িতে লিচু গাছ নেই।

মানিকপুরে প্রতি বছরই কোটি টাকার লিচু উৎপাদন করে থাকেন কৃষকরা। গ্রামের উঁচু নিচু টিলায় সারি সারি লিচুর বাগান, প্রতিটি পরিবারের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় গাছের ডালে ডালে পাকা লিচুর ঝলকানি মনোরম পরিবেশের দৃশ্য মুগ্ধ করে সবাইকে। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে মূলত লিচুর গ্রাম গুলোর কৃষাণ-কৃষাণীরা মধুর উৎসব মনে করেন। পুরুষদের সাথে মহিলারাও সমান তালে ওই এলাকায় লিচু উৎপাদন ও বাজার জাতে কঠোর পরিশ্রম করে থাকেন।

মানিকপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের লিচু চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শত বছর পূর্বে গৌরিপুর জমিদারের ছাতক-দোয়ারাবাজার এস্টেটের নায়েব হরিপদ রায় ও শান্তি পদ রায় মানিকপুরের কাচারি বাড়িতে কয়েকটি লিচুর গাছ লাগান। কালান্তরে শতবর্ষী ওইসব লিচু গাছ থেকেই ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার অন্তত ১০/১২টি গ্রামে লিচুর আবাদ হচ্ছে এখন। লিচুর গ্রাম হিসেবে সেই আদিকাল থেকেই পরিচিত লাভ করেছে মানিকপুর। আর এ গ্রামের কৃষকদের উৎসাহ উদ্দীপনায় বিগত এক যুগ ধরে ছাতক উপজেলার মানিকপুর, চানপুর, গোদাবাড়ি,
বড়গোল্লা, কচুদাইড় ও দোয়ারাবাজার উপজেলার লামাসানিয়া, লাস্তবেরগাঁও, পরশ্বেরীপুর, টেংরাটিলা, টিলাগাঁও, নৈনগাঁও, বিরসিং, পাইকপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে লিচুর বাগান সম্প্রসারিত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত