মেহেরপুরে ফুলকপি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষিরা

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০১৭, ১২:৩৯

সাহস ডেস্ক

ক’বছর আগেও কপি ক্ষেতে অঝোরে কেঁদেছিলেন মেহেরপুরের ফুলকপি চাষিরা। ১ টাকা কেজি দরে কপি বিক্রি করে ক্ষেত থেকে কপি তোলারই খরচ ঘরে ওঠেনি। ওই বছর চাষে বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত না পেয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন চাষিরা। কিন্তু বর্তমানে কপি চাষ করে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে কপিচাষিরা। তাই এবার আগাম লাগানো ফুলকপি‘র যত্নআত্মিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

মেহেরপুর জেলার আগাম ফুলকপি চাষিদের মুখে এবার সুখের হাসি ফুটেছে। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির এক অনাবিল সুখে কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এবার জেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে আগাম ফুলকপি লাগানো নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূল ও কপিতে কোন রোগ বালাই না হলে এবারো ভাল ফলন ও লাভের আশা করছেন তারা। ফুলকপি চাষে বিঘা প্রতি মোট খরচ প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ভাল বাজার দর পেলে ক্ষেত থেকে পাইকারী দরে বিঘায় এক লক্ষ টাকার কপি বিক্রি’র আশা চাষিদের। জেলার বিভিন্ন মাঠে এবার ব্যাপকভাবে চোখে পড়েছে আগাম ফুলকপি চাষের চিত্র। বাম্পার ফলনের সঙ্গে আশা কাঙ্খিত দরের। এ ধারা অব্যাহত রাখা গেলে এ অঞ্চলে কৃষিতে ক্ষতি পুষিয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন কৃষকরা। 

কৃষি বিভাগের হিসেবে চলতি বছরে জেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে ফুলকপির চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে। এদিকে কৃষকদের ফুলকপির ভাল ফলন পেতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাই গত কয়েক বছরের লোকসান পুষিয়ে এবারও লাভের মুখ দেখতে আশাবাদী চাষিরা।

সরেজমিনে সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের মাঠে পড়ন্ত বিকেলে পরিচিত ফুলকপি চাষি কুতুব উদ্দিনের সাথে কথা হয়। তিনি হেসে জানান, গতবছর ৬ বিঘা জমিতে ফুলকপি, পাতা লাগিয়েছিলাম, প্রতি বিঘায় ১ লাখ টাকা হয়েছিল। এবার ৭ বিঘা লাগিয়েছি। তিনিআশা করছেন এবার অন্তত ৮ লাখ টাকার বেচাকেনার।

একই গ্রামের দবির উদ্দীন নিজ বাড়ির অনতিদূরে তিনবিঘা জমিতে আগাম ফুলকপি চাষ করেছেন। তিনি জানালেন- প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আবহাওয়া ভাল থাকলে ৫০থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ থাকবে।

গ্রামের সবজি চাষিরা জানান- কৃষি বিভাগ যথেষ্ট দেখভাল করছে। তাদের পরামর্শে সময় মতো সার, ওষুধ, সেচ দিয়ে কপি তৈরি করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় কপি বিক্রি হবে। দুর্যোগ হলে আসল টাকা ঘুরে আসে না।

মেহেরপুরজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এসএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান- বিশেষ করে আগাম ফুলকপি চাষ নিয়ে কৃষকদের এখন কিভাবে সময় চলে যাচ্ছে তা বুঝতে পারছে না। কারণ গত বছর তারা ১ বিঘা ফুলকপি চাষ করে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পেয়েছে। লাভের আশায় কৃষক কিন্তু এই আগাম ফুলকপি চাষে আগ্রহী। 

তিনি আরও বলেন- আমরা মাঠ পর্ষায়ে চাষিদের কপির ভাল ফলনের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছি। বিশেষ করে কোন ধরনের পরিচর্যা নিতে হবে। কখন সেচ, সার, ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। সার্বক্ষণিকভাবে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ পেয়ে কৃষকও দারুণ খুশি। আগাম জাতের কারণে পরিচর্যার বিষয়ে কিছু পার্থক্য আছে, সেই সব বিষয়গুলো আমরা কৃষকদের অবহিত করছি।
সাহস২৪.কম/মশিউর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত