ভোলাহাটে রেশমের বাম্পার ফলন

প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:৫৬

পরপর কয়েক মৌসুম লোকসানের পর রেশমের জন্য বিখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে চাষীদের মুখে। একসময় রেশম, আম আর লাক্ষার জন্য বিখ্যাত দেশের প্রত্যন্ত ও পিছিয়ে পড়া এ উপজেলার অর্থনীতি চাঙ্গা ছিল। কালের বিবর্তনে লাক্ষা চাষ এখন বিলুপ্ত। অন্যদিকে, দেশের বাইরে থেকে রেশম আমদানি ও প্রকৃতিক দুর্যোগের কারণে বারবার রেশম চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় অনেকে রেশম চাষ ছেড়ে দিয়েছেন। 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কিছু চাষী এখনও রেশম চাষ করছেন। উপজেলায় রয়েছেন তালিকাভূক্ত ১৬৫ জন বসনী (রেশম চাষী)।

ভোলাহটে অবস্থিত বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, ভোলাহাটে রেশম চাষের জমির পরিমান ও চাষীর সংখ্যা কমে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩শ’ বিঘা তুঁত জমি (রেশম চাষের জমি) ও  ১৬৫ জন তালিকাভূক্ত বসনী (রেশম চাষী) রয়েছেন। এর মধ্যে সাম্প্রতিক বন্যায় অনেক তুঁত জমি ও পলু ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় সম্পূর্ণ আবাদ সম্ভব হয়নি। তুঁতের জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চাষীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ফলে বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ১৪ হাজার রেশম ডিম সকল বসনীর মাঝে বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। অর্ধেক অর্থাৎ ৭ হাজার রেশম ডিম ও বিশোধন সামগ্রী ৬৫ জন বসনীর মাঝে বিতরণ করা হয়েছিল চলতি অগ্রহায়ণী-১৪২৪ বন্দে (রেশম চাষ মৌসুমকে বন্দ বলে। বছরে তিনটি বন্দ)।

এ বন্দে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটেনি ও নিয়মিত রেশম চাষীদের নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ও চাষীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগীতা দিয়েছেন রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. কামাল উদ্দিন হতে শুরু করে বোর্ডের জেলা অফিসের সহকারী পরিচালক কাজী মাসুদ রেজা, ফার্ম ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন, রেশম প্রতিপাদক অলিউল হক সহ কর্মীরা। ফলে মিলেছে বাম্পার ফলন।

বোর্ড আশা করছে, ৭ হাজার ডিমে প্রায় ৫ হাজার কেজি রেশম গুটি উৎপাদিত হবে (ভাল মানের এক কেজি রেশমগুটির মূল্য সাড়ে ৩শ’ টাকা)।

রেশম চাষী চরধরমপুরের ছামিরুদ্দিন, তোফাজ্জুল হোসেন, তসলিম, বজরাটেক গ্রামের এরশাদ আলী জানান, এ বন্দে রেশমের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছর এ বন্দে প্রকাতিক দুযোর্গে সর্বস্ব হারিয়ে ছিলেন তারা। এ বন্দেও বন্যায় তুঁত জমি তলিয়ে যাওয়ায় অনেক বসনী চাষ করতে পারেননি। তবে যারা চাষ করেছেন তারা সবাই বাম্পার ফলন পেয়েছেন। চাষীরা রেশম বোর্ডের নিবিড় সহযোগীতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

চাষী ও রেশম কর্মকর্তরা বলেন, এই ধারা অব্যহত থাকলে রেশমের হারানো ঐতিহ্য আবার ফিরে পাওয়া সম্ভব। সেই সাথে রেশম চাষীরা দ্রুত নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবেন।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত