নাস্তিকদের জন্য গোরস্থান
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০১৬, ১৯:৩৭
প্রত্যেক ধর্মেই নির্দিষ্ট রীতিনীতি মেনে সম্পন্ন করা হয় শেষকৃত্য। যিনি যে ধর্ম বিশ্বাস করেন তাকে সেই রীতি মেনে চিরবিদায় জানানো হয়ে থাকে। কিন্তু যারা কোনো ধর্ম বিশ্বাস করেন না অর্থাৎ নাস্তিক তাদের জন্য? তাদের কথা ভেবেই প্রথমবারের মতো আলাদা কবরস্থান চালু করেছে সুইডেন। দেশটির মোট জনগণের বেশিরভাগ মানুষ ধর্ম বিশ্বাস না করায় কাজটি করেছে তাঁরা।
মধ্য সুইডেনের বোরলাঙ্গে অবস্থিত কবরস্থানটি। দেশটির একজন শিক্ষক প্রথম নাস্তিকদের জন্য কবরস্থানের প্রস্তাব দেন। তবে তিনি কুর্দিস্তানের নাগরিক। জোসেফ এরডেম নামের এই ব্যক্তি সুইডেনের একটি গির্জার কাছ থেকে জায়গা চেয়ে আবেদন করেন। আলোচনা শেষে গির্জার পক্ষ থেকে তাকে জায়গা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে শর্ত হলো, কবরস্থানের দেখভালের দায়িত্ব থাকবে গির্জার হাতেই। এ বাদে অন্য কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না তাঁরা।
মাথাপিছু জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ বাস করে সুইডেনে, যারা ধর্ম বিশ্বাস করে না। এরডেম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘তাদের কবর এখন কেমন হবে মানুষ তা নির্ধারণ করতে পারবে। তবে কবরস্থানটি সকল ধর্ম এবং জাতির জন্য উন্মুক্ত। আমি অনেক মানুষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। তাদের অনেকেই ধর্মে বিশ্বাসী, অনন্দের কথা, এ বিষয়ে তাদের সাড়াও ইতিবাচক। প্রকৃতপক্ষে, এ বিষয়ে পুরো দেশের আস্তিক এবং নাস্তিক সবাই ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।’
যারা ধর্ম মেনে চলেন তাঁরা এই কবরস্থানে জায়গা পাবেন কিন্তু কবরে কোন ধর্মীয় চিহ্ন ব্যবহার করা যাবে না। স্থানীয় অনেকেই কবরস্থানটিকে তাদের শেষ ঠিকানা হিসেবে বেছে নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
গানার লিন্ডগ্রেন নামে স্থানীয় একজন শিক্ষক বলেন, ‘আমি চাই না পাথর দিয়ে তৈরি কোন স্থানে আমার কবর হোক, যা পরবর্তীতে দেখভাল করতে হবে। গির্জার প্রথা অনুযায়ী আমার কবর হোক তাও চাই না। তাই এই কবরস্থানটি আমার জন্য উপযুক্ত।’
গালাপ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড দি ডাব্লিউআই নেটওয়ার্ক অব মার্কেট রিসার্চের এক জরিপ অনুযায়ী, সুইডেনের ৭৬ শতাংশ মানুষ কোন ধর্ম বিশ্বাস করেন না। ৬৫ দেশের এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চীন। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের ৯৪ শতাংশ মানুষ নিজেদের ধার্মিক হিসেবে মনে করেন। এ তালিকায় আরও রয়েছে আর্মেনিয়া, বাংলাদেশ, জর্জিয়া এবং মরোক্কো। বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ এখনো নিজেদের আস্তিক মনে করেন।