বাংলাদেশ চীনের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার: শি জিনপিং
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০১৬, ১৬:৫৭
দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা পৌঁছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, বাংলাদেশকে তার দেশ দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ‘গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার’বলে মনে করে।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক চায়না ডেইলির এক খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের রাষ্ট্রপ্রধানের এ সফর সম্পর্কের ‘নতুন যুগের সূচনা’। শি জিনপিংও দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশার কথা বলেছেন।
বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, “পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থার সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমরা প্রস্তুত। দুই দেশের সহযোগিতার সম্পর্ককে আমরা আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে চাই।”
‘ওয়ান-বেল্ট, ওয়ান রোড’ নীতি ধরে এগিয়ে যাওয়া চীনের সহযোগিতা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে শি জিনপিংয়ের এই ঢাকা সফর। ১৯৮৬ সালে লিশিয়ানইয়ানের পর বাংলাদেশে আসা প্রথম চীনা রাষ্ট্রপ্রধান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, শি'র এই সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের অন্তত ২৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে।
সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতামূলক চুক্তি ও সমঝোতার আওতায় চীনের কাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার আশা করছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
বিবৃতিতে শি জিনপিং বলেন, “৪১ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের ইতিহাসে বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্ব সব সময়ই সামনের দিকে এগিয়েছে।”
রাষ্ট্রের সমৃদ্ধির জন্য চীন ও বাংলাদেশকে উন্নয়নের একই চ্যালেঞ্জের পথে হাঁটতে হচ্ছে মন্তব্য করে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এই নেতা বলেন, তার দেশের মানুষ এক ‘মহৎ রূপান্তরের’জন্য কাজ করছে। আর বাংলাদেশ কাজ করছে ‘সোনার বাংলা’গড়তে।
শি জিনপিং বেলা সাড়ে ১১টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় রাষ্ট্রীয় এই অতিথিকে। লাল গালিচা সংবর্ধনার সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সুসজ্জিত একটি দল তাকে গার্ড অফ অনার দেয়।
১৩ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকা এসেছেন শি, যে দলে ক্ষমতানীন কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা ছাড়াও কয়েকজন মন্ত্রী রয়েছেন।
বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেবেন চীনের প্রেসিডেন্ট। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই বৈঠকের পর দুই নেতার উপস্থিতিতে চুক্তি সই হবে।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হোটেলে গিয়ে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।
সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদ ও শি জিনপিং। সফররত প্রেসিডেন্টের সম্মানে নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সাভারে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন চীনের প্রেসিডেন্ট। এর পরপরই ঢাকা ছেড়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তিনি।