বানোয়াট চুরির অপবাদে খুটিতে বেঁধে শিশু নির্যাতন (ভিডিও)

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১২:০৮

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরায় জুতা চুরির অপবাধ দিয়ে শিশু বাপ্পীকে ঘুটিতে বেঁধে মারপিট ও নির্যাতন করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের কাটিকা লষ্করপাড়া মানিক ময়রার মোড় সংলগ্ন বাবলুর দোকানে এ ঘটনা ঘটে। শিশু বাপ্পিকে দোকানের খুটিতে বেঁধে নির্যাতন করে দোকানদার বাবলুর রহমান। শিশু বাপ্পি (৮) পার্শ্ববর্তী লষ্করপাড়া মন্দির মোড়ের ভাড়াটিয়া বাসিন্দা সোহেল উদ্দীনের ছেলে ও শাল্লি সাতক্ষীরা আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।

শিশুটির মা নাজমা বেগম বলেন, অন্যের কাছে জানলাম ছেলে বাপ্পিকে খুটিতে বেঁধে রেখেছে। দৌড়ে ওখানে যেয়ে দেখি খুটিতে বাঁধা। পরে তাদের হাতে পায়ে ধরে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি। আমরা গরীব মানুষ। বাপ্পির বাবা ভ্যান চালায়। আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করি। বলেছে বাপ্পি নাকি জুতা চুরি করেছে। বাপ্পি জুতা চুরি করেনি। 

শিশুটির দাদী ছবিরণ বিবি বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমি ভিক্ষা করে খাই। ওকে আর এখানে রাখবো না অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিবো। 

সদরের কাটিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনাস্থলে যেয়ে আমি তাদের পায়নি। ঘটনাস্থল থেকে জানলাম পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুস সেলিম ও মহিলা কাউন্সিলর জোসনা আরা ছেলেটিকে মুক্ত করে দিয়েছে।

তবে অভিযুক্ত বাবলুর রহমান বেঁধে রাখার কথা অস্বীকার করে বলেন, শিশুদের বেঁধে রাখা দণ্ডনীয় অপরাধ। বেঁধে রাখার মত কোন ঘটনা ঘটেনি। জুতা চুরি করছিল এজন্য একটু ভয়ভীতি দেখানো হয়েছিল। পরে সেলিম কমিশনারের কাছে মোবাইল করে তার কাছে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে শিশু বাপ্পি বলেন, আমি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে ডেকে পাশে রাখা জুতা তুলে নিয়ে আসতে বলে। তুলে নিয়ে আসার পর আমাকে দড়ি দিয়ে খুটিতে বেঁধে রাখে।

পৌরসভার কাউন্সিলর সেলিম হোসেন বলেন, জানলাম চুরি করেছে। তবে বাপ্পি চুরি করেনি। এটা জানার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

শিশুটিকে বেঁধে রাখা অবস্থায় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লাকে অবহিত করা হয়। তিনি কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদকে ঘটনাস্থলে পাঠান।

তবে এ বিষয়ে পরবর্তীতে সদর থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন। 

এদিকে, সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য সোহাগ হোসেন অমানবিক এ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, শিশুটি কোন অপরাধ করলে তাকে পুলিশের কাছে দেওয়া যেতো। কিন্তু দড়ি দিয়ে খুটিতে বেঁধে নির্যাতন করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত