গৃহবধূ সুমি হত্যা: স্বামীর আত্মহত্যা

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০১৭, ১৬:৪৪

রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালি শাহাপুর এলাকায় গৃহবধূ নাসরিন খাতুন ওরফে সুমিকে (২৪) ‘হত্যার’ পর তার স্বামী মিঠুন আলী ওরফে ফিডার (২৭) আত্মহত্যা করেছেন। রবিবার (৮ জানুয়ারি) সকালে জেলার চারঘাট উপজেলার শলুয়া রেলগেট এলাকায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

ফিডার নগরীর মতিহার থানার শাহাপুর এলাকার আবদুল মজিদের ছেলে। শনিবার বিকেলে ফিডার তার স্ত্রী সুমিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে সুমির বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। সুমি নগরীর উপকণ্ঠ হরিয়ান সুগারমিল এলাকার মো. আসাদুজ্জামানের মেয়ে। প্রায় সাড়ে ৪ মাস আগে ফিডারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল।

সুমি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিহার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা জানিয়েছেন, মামলায় ফিডার ছাড়াও তার বাবা আবদুল মজিদ (৫২), মা আন্নাজান মালেকা (৪০) ও ছোট ভাই চান্দু মিয়াকে (২৪) আসামি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আসামিদের মধ্যে ফিডারের মা-বাবাকে শনিবারই গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রবিবার দুপুরে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালত তাদের কারাগারে পাঠান। ফিডার ও তার ভাই চান্দুকে পুলিশ খুঁজছিল। এরই মধ্যে ঘটনার পরদিনই আত্মহত্যা করলেন ফিডার। রেলওয়ে পুলিশের কাছ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও জানান, যৌতুক নিয়ে বিরোধের জের ধরে সুমিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু আসামিপক্ষের দাবি, সুমি জানালার সঙ্গে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

সুমির মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) সহকারী অধ্যাপক ডা. এনামুল হক। তিনি জানান, ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলে সুমির মরদেহের গলায় চিহ্ন পাওয়া যেত। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি; বরং মরদেহের ডান কানের কাছে জখম পাওয়া গেছে।

শনিবার রাতে রামেক হাসপাতালে সুমির লাশ রেখে পালিয়ে যান তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে রবিবার দুপুরে রামেকের মর্গে সুমির মরদেহের এ ময়ানতদন্ত করা হয়। আগামি সপ্তাহে ময়ানতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশকে দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ডা. এনামুল হক।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে চারঘাট থানার এসআই আখের আলী জানান, রবিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার শলুয়া রেলগেট এলাকায় রেললাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ফিডার ধূমপান করছিলেন। এ সময় পাবনার ঈশ্বরদী থেকে একটি কমিউটার ট্রেন রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটি সামনে আসলে ফিডার তার সামনে ঝাঁপ দেন।
এতে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে তার স্বজনরা মরদেহ উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়। এ বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় তারাই আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

জানতে চাইলে ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে একজন এসআইকে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্ত করারও প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত