পুরোহিত সেজে হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করলেন ‘কোরআনে হাফেজ’!

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৭:৩১

সাহস ডেস্ক

নিজেকে মিলন চক্রবর্তী পরিচয় দিয়ে হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করেছেন কোরআনে হাফেজ আশরাফুল ইসলাম মিলন (৩৫)। চার বছর আগে বিয়ের পর থেকে মাগুরা সদর উপজেলার চেঙ্গাডাঙ্গা গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তিনি।

গলায় ব্রাক্ষ্মণের পৈতা পরে পুরোহিত সেজে ‘মিলন ঠাকুর’ পরিচয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে করে বেড়িয়েছেন পূজা-অর্চণা। এ পর্যন্ত এক ডজনের ওপর হিন্দু বিয়েও পড়িয়েছেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা আর হয়নি। প্রতারণার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ডিবি পুলিশ গতকাল বুধবার সকালে তাকে আটক করেছে।

মাগুরা ডিবি পুলিশের এসআই মো. সালাহ উদ্দিন জানান, ২০ পারা কোরআনে হাফেজ আশরাফুল ইসলাম মিলন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কানচন নগর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। সেখানে তার আগের স্ত্রী ও একটি সন্তান রয়েছে। ভারতে যাতাযাতের সূত্র ধরেই সেখানে মাগুরা সদরের চেঙ্গারডাঙ্গা গ্রামের বিকাশ বিশ্বাসের সাথে তার পরিচয়।

তিনি জানান, এ পরিচয়ের সূত্র ধরেই মাগুরার চেঙ্গারডাঙ্গা গ্রামে বিকাশ বিশ্বাসের বাড়িতে যাতায়াত শুরু তার। পরে ২০১৩ সালে হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিচয়ে তার মেয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মিতা বিশ্বাসকে বিয়ে করে মিলনের শ্বশুর বাড়িতে বসবাস। একই সাথে এলাকায় পুরোহিত সেজে পড়িয়ে আসছেন পূজা ও বিয়ে। নিয়মিত পূজার পাশাপাশি তিন বছরে তিনি বিয়ে পড়িয়েছেন এক ডজনের ওপরে।

এসআই জানান, মিলনের বিরুদ্ধে এলাকায় নানা প্রতারণা ও দালালির অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে সেনা বাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে চয়ন বিশ্বাস নামে এক যুবকের কাছ থেকে ৬ লাক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। চয়ন বিশ্বাসের লিখিত অভিযোগে বুধবার ডিবি পুলিশ তাকে আটক করেছে।

ডিবি অফিসে সাংবাদিকদের কাছে মিলন দাবি করেন তিনি প্রতারক নন। তিনি ২০ পারা কোরআনে হাফেজ। তার আগের স্ত্রী, সন্তান রয়েছে। কিন্তু ২০০৮ সালে তিনি ভারতের যাদবপুর গিয়ে হরিপদ চক্রবর্তী নামে এক ব্যাক্তিকে ধর্ম বাবা ডাকেন। এ সময় তিনি আইনগতভাবে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন।

এদিকে, আটক মিলনের পাসপোর্ট উদ্ধার করে দেখা গেছে গত দুই/তিন বছরে সে ৫০ বার ভারতে গেছে। তাছাড়া ভারত ও বাংলাদেশে তার নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সে বড় কোন অপরাধী চক্রের সদস্য কিনা, কোন অপরাধ করে আত্মগোপনে রয়েছে বা কোন অপরাধ সংগঠনের জন্য এখানে অবস্থান কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান এস আই সালাহ উদ্দিন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত