রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১২:৫৪
কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করছেন জাতিসংঘ’র মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি।
তিনি বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি মিয়ানমার থেকে নতুন পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নেন।
ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে বিশেষ দূত টেকনাফ লেদার আইএমও স্বাস্থ্য ক্লিনিকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা অর্ধ শতাধিক স্বজন হারা ও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন এবং হ্নীলা এলাকার লেদা, রঙ্গীখালী, আলী খালী, নয়াপাড়া ও জাদিমোড়া নাফনদী সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। এর পর নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এসময় নয়াপাড়া শরনার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন।
এসময় আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও)র প্রতিনিধি, বিভিন্ন এনজিও সংস্থা, সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার বিশেষ দূত ইয়াংঘি লি গত সোমবার চার দিনের সফরে বাংলাদেশ আসেন। তিনি দুইদিন কক্সবাজারে অবস্থান করে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
মূলত মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের কথা শুনতে তিনি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন বলে জানা গেছে। এর আগে তিনি ১২ দিন মিয়ানমার সফর করেন। সেখানে মিয়ানমার সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মায়ানমারের অভ্যন্তরে সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা হয়। এতে মায়ানমার সীমান্ত পুলিশের ১২ সদস্য নিহত হয়। এই হামলার জন্য রোহিঙ্গা মুসলমানদের দায়ী করে নির্যাতন চালায় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের নির্যাতনে শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি রাখাইন কমিশনের তিন সদস্য উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং ও টেকনাফের লেদা ক্যাম্প ঘুরে দেখেন। এরপর আসেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্ণিকাট। তিনি চলে যাবার পর আসেন তিনি দেশের রাষ্ট্রদূতগণ। তাদের পর রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে চার দিনের সফরে সোমবার বাংলাদেশে আসেন জাতিসংঘের এই বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার। ওইদিনই রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এবং সিডিউল মতে মঙ্গলবার বেলা ১১টার বিমানে কক্সবাজার পৌঁছান তিনি। কক্সবাজারে কর্মরত ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধিরা তাকে রিসিভ করে বেলা ১টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যান। বুধবার নিয়ে যাওয়া হয় টেকনাফের অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
নব্বই দশকের পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে অবস্থান করছে অন্তত ৪-৫ লাখ রোহিঙ্গা। নানা ভাবে তোদের কারণে পর্যটন শহর ও আশপাশের এলাকার পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ঠেঙ্গারচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের কথা জানান সরকার।