ডিআইজির প্রতিবেদন...

সাঁওতালপল্লীতে আগুনে সরাসরি জড়িত এসআই ও কনস্টেবল

প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০১৭, ১২:৫৩ | আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭, ১৫:৪৩

অনলাইন ডেস্ক

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালপল্লীতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য সরাসরি জড়িত বলে হাইকোর্টে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

আজ ৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অগ্নিসংযোগে সরাসরি জড়িত ছিলেন গাইবান্ধা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান ও জেলা পুলিশ লাইনসের কনস্টেবল সাজ্জাদ হোসেন।

আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে জানানো হয়, দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু সাংবাদিকদের জানান, ওই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি নথিভুক্ত করতে বলেছেন হাইকোর্ট।

আগুন দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের কিছু সদস্য সরাসরি জড়িত উল্লেখ করে হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের বেঞ্চ আরেকটি আদেশ দিয়েছিলেন। ওই আদেশে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফুল ইসলাম ও গোবিন্দগঞ্জের চামগাড়িতে ওই দিন দায়িত্বরত ওই থানার সব পুলিশকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের কথা বলা হয়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছ থেকে প্রতিবেদনের কিছু অংশ জানা গেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, টেলিভিশনে প্রদর্শিত ভিডিও ক্লিপ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে কিছু পুলিশ সদস্য এবং দুজন সিভিল পোশাকধারী ব্যক্তি সাঁওতালদের বাড়িঘরে আগুন লাগানোয় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। আরো কিছু পুলিশ সদস্য কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, যারা আগুন লাগানোয় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেননি। তবে তারা আগুন নেভানোর চেষ্টাও করেননি।

এর আগে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালপল্লীতে অগ্নিসংযোগে পুলিশ জড়িত কি না, সে বিষয়ে তদন্তের জন্য গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

ওই নির্দেশ অনুযায়ী গাইবান্ধার মুখ্য বিচারিক হাকিম ঘটনার তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ আখ খামারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেখানে বসবাসরত প্রায় আড়াই হাজার সাঁওতাল বসতি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাঙালি-পুলিশ ও সাঁওতালদের মধ্যে সংঘর্ষে তিন সাঁওতাল নিহত ও অনেকেই আহত হন। মামলা করা হয় শতাধিক সাঁওতালের নামে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার ভিডিও বের হলে দেখা যায়, কয়েকজন পুলিশ সদস্য সাঁওতালদের ঘরবাড়িতে আগুন দিচ্ছেন।