‘৩০ লাখ বাঙালি হত্যা করতে হবে’

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০১৭, ১৫:১৮

সাহস ডেস্ক

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত ১১টা ৩০ মিনিটে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন নস্যাৎ করতে আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বরোচিত হামলা চালায়।

এর আগে ১৯৭১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে সদর দফতরে এক সামরিক সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বলেন, ৩০ লাখ বাঙালি হত্যা করতে হবে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ‘অপারেশন সার্সলাইট’ নামে সামরিক অভিযান চালায়। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর পরিকল্পনা ছিল ২৬ মার্চের মধ্যে বড় নগরীগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেওয়া এবং এরপর এক মাসের মধ্যে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল অথবা সামরিক শক্তি নির্মূল করে ফেলা। তাদের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে পূর্ব পাকিস্তানে সিনিয়র পাকিস্তানী কর্মকর্তারা লে. জেনারেল শাহেবজাদা ইয়াকুব খান, জিওসি, পূর্ব পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ভাইস এডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ আহসান তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। এরপর লে. জেনারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও জিওসি হন।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল হামিদ টেলিফোনে জেনারেল রাজাকে সামরিক অভিযান পরিচালনা করার দায়িত্ব দেন।

১৮ মার্চ সকালে জেনারেল রাজা এবং মেজর জেনারেল রাওফরমান আলী ঢাকা সেনানিবাসে জিওসি’র অফিসে বসে এই পরিকল্পনার কথা লিখেন। জেনারেল ফরমান আলী পাঁচ পৃষ্ঠা কাগজে ১৬টি প্যারাগ্রাফে একটি লিড পেন্সিল দিয়ে ব্লু অফিস প্যাডে লিখেন। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকিস্তানী পরিকল্পনাকারীরা সামরিক আইন অমান্যকারী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী এবং যেকোন বেসামরিক লোক ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নির্মূল করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতে বেসামরিক এলাকায় সামরিক অভিযান ও হামলা চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। এই সামরিক অভিযান চালানোর স্থানগুলো হলো- ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, কুমিল্লা, যশোর, রাজশাহী, রংপুর, সৈয়দপুর ও সিলেট।

তবে সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য কোন সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ ছিল না। এতে বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক নেতাদেরকে গ্রেপ্তার, বাঙালি সেনা ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদেরকে নিরস্ত্র করা। লে. জেনারেল টিক্কা খানের ধারণা ছিল ১০ এপ্রিলের পর আর কোন প্রতিরোধ থাকবে না।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত