মেলা না করায় স্কুল সভাপতির পা ভাঙলো জুয়াড়িরা

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০১৭, ১৮:৫৪

রাজশাহী ব্যুরো

স্কুলে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের সঙ্গে মেলার আয়োজন না করায় স্কুল সভাপতিকে পিটিয়ে তার পা ভেঙে দিয়েছেন জুয়াড়িরা। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কৈপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে গত রবিবার এ ঘটনা ঘটে। মেলা না হওয়ায় জুয়ার আসরও বসাতে না পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে জুয়াড়িরা স্কুল সভাপতিকে পিটিয়েছেন বলে জানা গেছে।

আহত মহিদুল ইসলাম (৫০) ঘটনার দিন থেকেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি আছেন। মহিদুলের ওপর এ হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তবে বাদীপক্ষের অভিযোগ, পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে গড়িমশি করছে।

কৈপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহিদুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়ি গ্রামের মৃত আলী আহমেদের ছেলে। তিনি পুঠিয়ার ভালুকগাছি ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক।

বুধবার দুপুরে রামেক হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় মহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ওই দিন স্কুল প্রাঙ্গনে আলোচনা সভা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানের সঙ্গে তিন দিনের একটি মেলা আয়োজন করার জন্য এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি তার কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

কিন্তু স্কুল বন্ধ রেখে তিনি মেলার আয়োজন করেননি। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে কৈপুকুরিয়া গ্রামের ইসলাম আলী (৫০), ফুলবাড়ি গ্রামের সনি হোসেন (২৭), পালোপাড়া গ্রামের রকি শেখ (২৬) ও সুমন আলীসহ (২২) ৭ থেকে ৮ জন ব্যক্তি অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে তা প- করে দেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি বাঁধা দিতে গেলে রড, লোহার পাইপ, হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

মহিদুল ইসলামের দাবি, হামলাকারীরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী এবং জুয়াড়ি। তিনি ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাদের নাম পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছেন। এ জন্য তারা আগে থেকেই তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। এরপর মেলা না করায় তারা আরও ক্ষিপ্ত হন। এ জন্য তার ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে।

মহিদুল ইসলাম বলেন, মেলার আয়োজন করলে হামলাকারীরা সেখানে জুয়ার আসর বসাতেন। এ জন্য তিনি মেলা করেননি। তার ওপর হামলার ঘটনায় ছোট ভাই শহীদুল ইসলাম (৪০) বাদী হয়ে জুয়াড়িদের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো আসামিকেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। মহিদুলের অভিযোগ, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ গড়িমশি করছে।

তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলছেন, ঘটনার পর থেকেই আসামিরা এলাকাছাড়া। তাই তাদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। তবে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত