দুঃসহ স্মৃতি শ্রমিকদের এখনো তাড়া করে

প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০১৭, ১২:৪৮

সাভারে রানা প্লাজা ধসে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের শোকাবহ ২৪ এপ্রিল আজ। সাভার ট্র্যাজেডির চার বছর হয়ে গেলেও এখনো দুঃসহ স্মৃতি তাড়া করে ফেরে শ্রমিকদের। আহত শ্রমিকদের অনেকেই পুরোপুরি সুস্থ হননি। তাদের অনেকে আবার অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তাই অনেকে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সাভার ট্র্যাজেডি স্মৃতিচারণ করে বেঁচে যাওয়া শ্রমিকরা বলেন, ২০১৩ সালে ২৪ তারিখের আগের দিনই ভবনে ফাটল দেখা যায়। এ কারণে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়। পরদিন শ্রমিকেরা প্রবেশ করতে চাননি মরণফাঁদের ভবনে। ভবনের কিছু হয়নি বলে শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধ্য করেন মালিকেরা।

৯ তলা রানা প্লাজায় পাঁচটি পোশাক কারখানা ছিল। এগুলো হলো ইথারটেক্স, নিউওয়েভ বটমস্, নিউওয়েভ স্টাইল, ফ্যানটম অ্যাপারেলস ও ফ্যানটম ট্যাক। সাতসকালে কাজও শুরু হয়।ঘটনার সময় কারখানাগুলোয় কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করছিলেন।কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুরো ভবন ধসে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েন হাজারো শ্রমিক। আজও সেই স্মৃতি আমাদের মনে তাড়া করে বেয়ে চলে।

ভবন ধসের ভয়াবহতা ছিল অনেক বেশি। টানা ২১ দিনের উদ্ধার অভিযানে আড়াই হাজারের বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। প্রাণহানি এবং নিখোঁজের সংখ্যাও কম নয়। এখনও নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে রানা প্লাজা চত্বরে হাজির হন স্বজনেরা।

৪ বছর আগে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল। হাজারো শ্রমিকের মৃত্যু আর অসংখ্য শ্রমিকের পঙ্গুত্বের কারণে সারাবিশ্বে আলোচনায় ছিল বাংলাদেশ।

বিশাল সব ইট-পাথরের চাঁই তুলে, আর জীবনবাজি রেখে স্বেচ্ছাসেবীসহ উদ্ধারকর্মীরা কাজ চালালেও সবার সন্ধান মেলেনি ধ্বংসস্তূপ থেকে। মরদেহ উদ্ধারের তাদের সনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছিল।

জীবিত ও পঙ্গুত্ব বরণ করা অনেক শ্রমিক এখনও বেকার জীবন-যাপন করছেন। বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার কথা থাকলেও তা শতভাগ পায়নি শ্রমিকেরা। মানবেতর জীবন-যাপন করছেন রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকরা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত