অপারেশন ‘ইগল হান্টে’ ৪ জঙ্গি নিহত

প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০১৭, ১৯:৪৭

সাহস ডেস্ক

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে রফিকুল আলম আবুসহ চারজনের লাশ পাওয়া গেছে, যারা নিজেদের বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ‘অপারেশন ইগল হান্ট’ সমাপ্ত ঘোষণা করে এক ব্রিফিংয়ে একথা জানান রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি খুরশেদ হোসেন।

তিনি জানান, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সোয়াট টিম পরিচালিত ওই অভিযানে আহত এক নারী ও এক শিশুকে উদ্ধারের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই আস্তানায় অভিযানকালে সন্ধ্যার দিকে চার জঙ্গি আত্মঘাতী হয়। সোয়াতের অপারেশন শেষ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখন বোমা ডিসপোজাল দল কাজ করবে বলে জানান রাজশাহী রেঞ্জের এ ডিআইজি।

এর আগে, বিকাল ৫টার পরপরই একজন নারীকে নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায় ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে। এর ১৫-২০ মিনিট পরই আস্তানা থেকে বের হয়ে আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স। তাতে ছিল একটি শিশু। তবে দ্রুতগতিতে বের হওয়া ওই দুইটি অ্যাম্বুলেন্সে আরও কেউ ছিল কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া ওই নারী হলো জঙ্গি আবুর স্ত্রী সুমাইয়া। আর শিশুটি আবুর ছোট মেয়ে চার বছর বয়সী সাজিদা খাতুন। এর মধ্যে সুমাইয়ার পায়ে গুলি লেগেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাড়িটি থেকে গত রাতে ও আজ ভোরে কয়েক দফা গুলির শব্দ ভেসে আসে। সকাল নয়টার পর সেখান থেকে মুহুর্মুহু গুলির শব্দ আসে। অভিযান চলাকালে দিনভর থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যায়। ঘটনাস্থলে সকালেই বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল আসে। সেখানে আছে সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ও ফায়ার সার্ভিস। এ ছাড়া হরিজন সম্প্রদায়ের কয়েকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে ঘটনাস্থলে ডাকা হয়েছে।

দুপুর ১২টার দিকে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে মাইকে মিনিট পাঁচেক ধরে আহ্বান জানায় পুলিশ। কিন্তু এ আহ্বানে কেউ সাড়া দেয়নি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ‘জঙ্গি আস্তানা’র স্থান থেকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসে। সেখান থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখা যায়। এরপরই বাড়িটির দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের যেতে দেখা যায়।

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে গতকাল ভোর থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে জেলা পুলিশ ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।

সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে গতকাল ভোর থেকে ঘটনাস্থলের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত তা বজায় থাকবে বলে মাইকিং করে জানানো হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যার দিকে বাড়িটিতে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু করে সোয়াট। গতকাল সেখান থেকে মুহুর্মুহু গুলি ও কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। রাত নয়টার দিকে অভিযান স্থগিত করা হয়। আজ ভোরে ফের অভিযান চালানোর কথা জানানো হয়। শিবগঞ্জের যে বাড়িতে অভিযান চলছে, তার প্রায় আধা কিলোমিটার দূরেই আবুর নিজের বাড়ি। পরিবারের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় গত ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি সাইদুরের মালিকানাধীন বাড়িতে বসবাস করছেন বলে জানা যায়।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানোর পর পুলিশ গত শুক্র ও শনিবার ঝিনাইদহের একটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চালিয়ে ‘বিপুল বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম’ উদ্ধার করে।

এরপর মঙ্গলবার দিনভর রাজশাহীর একটি এলাকায় কয়েকটি বাড়ি ঘিরে ‘ব্লক রেইড’ চলে। তবে সেখানে কোনো জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পায়নি পুলিশ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত