‘এমডিজি অর্জনে সর্বাত্মক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে’

প্রকাশ : ১৮ জুন ২০১৭, ১৬:৪৭

সাহস ডেস্ক

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা খাতে সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জাতিসংঘের এমডিজি-৪ ও ৫ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বাত্মক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। 

তিনি আজ রবিবার (১৮ জুন) সংসদে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, ইতোমধ্যে সরকার এ খাতে এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে।

মন্ত্রী বলেন, এমডিজি-৪ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বর্তমান সরকার অগ্রাধিকার প্রদানের মাধ্যমে শিশু মৃত্যুহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে যে সব কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সেগুলো যথার্থ হওয়ায় এবং ইতোমধ্যে গৃহীত পদক্ষেপের ফলে শিশু মৃত্যুহার কাঙ্খিত হারে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এর স্বীকৃতি হিসেবে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ থেকে বাংলাদেশ পুরস্কৃত হয়েছে, যা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ শিশু তহবিল শিশু মৃত্যুহার ১৯৯০ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে দুই তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, বাংলাদেশ সে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। 

নাসিম বলেন, তাই এমডিজি-৪ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হলেও বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ের অনেক পূর্বেই সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, এমডিজি-৫ ১৯৯০ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতি ১ লাখ জীবিত জন্মের জন্য মাতৃমৃত্যুহার ৫৭৪ থেকে পর্যায়ক্রমে তিন-চতুর্থাংশ কমিয়ে ২০১৫ সালের মধ্যে ১৪৩-এ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে আলোকে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ইতোমধ্যে তা ১৭০-এ নেমে এসেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি ৬ হাজার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ১৩ হাজার ৪শ’টি কমিউনিটি ক্লিনিকে চালু করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে উন্নয়নখাতে ১৩ হাজার ১৫ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) এবং ৩৪ জন অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, এছাড়া স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করে তাদের মাধ্যমেও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করে তাদের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে ৩০ প্রকারের ওষুধ ও ২ প্রকারের পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।

নাসিম বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার মূল কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনায় স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে (৯-১১ সদস্যের) তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বিতরণের মূল ধারায় যুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার’ হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ই-হেলথ কার্যক্রমের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘ ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রীকে ডিজিটাল হেলথ ফর ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট পুরস্কার প্রদান করেছে। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গাইবান্ধা জেলায় যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের এমপাওয়ার এবং এমআইএস- স্বাস্থ্য কর্তৃক চালুকৃত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাতৃসেবা প্রদানের একটি প্রকল্প সম্প্রতি জাতিসংঘ ফাউন্ডেশন ফর মোবাইল হেলফ এলায়েন্স কর্তৃক বিশ্বের ১১টি শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবনার একটি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

নাসিম বলেন, ই-হেলথ যথাযথ বাস্তবায়নের ফলে এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ মন্থন পুরস্কার লাভ করেছে। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ের একাধিক পুরস্কার তো রয়েছেই।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনসহ উল্লেখিত কার্যক্রমগুলো গ্রহণ করার ফলে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে এবং এটাকে একটি মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এছাড়া ২০১৪ সালের মে মাসে ৬৭তম বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকে জনগণের সম্পৃক্ততা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এ বিষয়টিও প্রশংসিত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত