ওআইসির অন্তর্ভুক্ত পর্যটন মন্ত্রীদের আসর বসছে ঢাকায়
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০১৭, ১৭:২৮
বাংলাদেশ প্রথমবারেরমত অর্গানাইজেশন ফর ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)-র অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর পর্যটন মন্ত্রীদের নিয়ে এক বৈঠকের আয়োজন করতে যাচ্ছে।
বৈঠকের ব্যাপারে বাংলাদেশ পর্যটন উন্নয়ন কতৃপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, এই বৈঠকে মুসলিম বিশ্বে দেশের ইসলামিক ঐতিহ্য তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হবে। গত মে মাসে জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন (আইএনডব্লিউটিও)-র এক যৌথ বৈঠকে বাংলাদেশ পরবর্তী ওআইসি পর্যটন মন্ত্রীদের বৈঠকের সভাপতি মনোনীত হয়।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড (বিটিবি)-র প্রধান নির্বাহী ড. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা ওআইসি-র ৫৭ টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে অন্তত ৩০ টি সদস্য রাষ্ট্রের পর্যটন মন্ত্রীদের অংশগ্রহণ ঘটবে বলে আশা করছি, যার মাধ্যমে আমরা মুসলিম বিশ্বে নেতৃবৃন্দের কাছে আমাদের ইসলামিক ঐতিহ্য তুলে ধরার সুযোগ পাবো।
‘পর্যটনের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংহতির বিকাশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পর্যটন মন্ত্রীদের ইসলামিক কনফারেন্সের এই ১০ম অধিবেশনটি আগামী ১২ থেকে ১৪ নভেম্বর রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি দুই বছর পর পর বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রে আইসিটিএম-র এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের ৯ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালে নায়ামির রাজধানী নাইজারে। প্রথা অনুযায়ী গত বৈঠকেই পরবর্তী ১০ম অধিবেশন আয়োজনে আগামী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ পর্যটন মন্ত্রীকে সংগঠনের সভাপতিত্ব হস্তান্তর করা হবে। এর ফলে মুসলিম দেশসমূহে বাংলাদেশের পর্যটন সম্ভাব্যতা আরো কার্যকরভাবে প্রদর্শন করতে সহায়তা করবে।
আইসিটিএম-এর প্রতিটি সভায় সদস্য দেশগুলোর দুটি শহরকে ‘ইসলামি পর্যটন রাজধানী’ হিসেবে ঘোষণা করার ঐতিহ্য উল্লেখ করে বিটিবি প্রধান বলেন, ২০১৯ বা ২০২০ সালের জন্য চট্টগ্রাম ও বাগেরহাটের নাম পরবর্তী সম্মেলনে প্রস্তাব করা হতে পারে, যাতে তাদের মধ্যে একটিকে ইসলামিক ট্যুরিজমের রাজধানী হিসেবে বেছে নেয়া যায়। সংগঠনের ৯ম অধিবেশনে গত ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জন্য সৌদিআরবের মদিনা ও ইরানের তাবরিজ শহরকে ইসলামি পর্যটনের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
ড. নাসির বলেন, আমাদের দুটি শহরের মধ্যে একটি শহর নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। যদি হয়, তাহলে আমরা মুসলিম বিশ্বে পর্যটন খাতে আমাদের শহরটিকে আকৃষ্ট করে তুলতে একবছরের একটি পরিকল্পনা তৈরি করব। তিনি বলেন, বিটিবি আগামী ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য ৫ম ওআইসি ট্যুরিজম মেলার আয়োজক হিসেবে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এছাড়া আইসিটিএম এর ৯ম অধিবেশনে ওআইসি পর্যটন মেলার আয়োজনের জন্য তৃতীয় ও চতুর্থ দেশ হিসেবে মিশর ও ইরানকে মনোনীত করা হয়।
আইসিটিএম মূল বিষয় ইসলামি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উন্নয়ন ও প্রচার ছাড়াও ১০ম এই অধিবেশনে ইসলামিক ট্যুরিজমের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের পর্যটন উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি সম্পর্কে পর্যালোচনা করা হবে। ড. নাসির বলেন, আমরা এজেন্ডা চূড়ান্ত করতে আলোচনায় কিছু নতুন পর্যটন প্রকল্প উপস্থাপন করব।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখাগেছে ২০১৫ সালে মুসলিম পর্যটকের সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ৭০ লাখ, যা মোট ভ্রমণ অর্থনীতির ১০ শতাংশ। এছাড়া এতে ২০২০ সালের মধ্যে পর্যটকের সংখ্যা হবে ১৬ কোটি ৮০ লাখ। আর বিশ্বের ভ্রমণ বাজারে এর অংশ হবে ১১ শতাংশ এবং এর বাজারের আয়তন হবে ২০ হাজার কোটি।