ছাগল ধান খাওয়ায় নারী নির্যাতন মামলা!

প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০১৭, ১৬:২৭

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

ধান ক্ষেতের চারা ছাগল খাওয়াকে কেন্দ্র করে থানায় নারী নির্যাতনের মামলা করে মন্তাজ আলী নামে এক কৃষককে বাড়ি ছাড়া করেছে প্রতিপক্ষ। কৃষক মন্তাজ আলী লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের দুহুলী গ্রামের রোস্তম আলীর ছেলে। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, কৃষক মন্তাজ আলীর ধান ক্ষেত নষ্ট করত তার প্রতিবেশী অছিমুদ্দিনের ছেলে আসাদুজ্জামানের গরু-ছাগল। এ নিয়ে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লাগত ওই দুই পরিবারের মাঝে। এ ঘটনায় তারা প্রতিবেশী হলেও কেউ কারো বাড়িতে যাতায়াত করত না। 

গত ২৬ মে কৃষক মন্তাজ আলী ও তার ছেলে জাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন আসাদুজ্জামানের স্ত্রী রিনা আক্তার। মামলাটি আমলে নেয় থানা পুলিশ। এ মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারে তাড়া করলে এলাকাবাসীর নজরে আসে ঘটনাটি।

মামলায় বাদি অভিযোগ, ১৭ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিবেশী ফারুক হোসেনের বাড়িতে বিয়ের দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময় নিজ বাড়ির ফেতরে থাকা ওই কৃষক মন্তাজ আলীর ছেলে জাহেদুল ইসলাম তাকে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে। এ সময় তার চিৎকারে স্বাক্ষী তার ৯ বছরের মেয়ে, শ্বাশুড়ি ও ভাগিনা এলে জাহেদুল পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, পাশ্বের বাড়িতে বিয়ে চলছিল এবং তখন বিদ্যুৎ না থাকায় বিয়ের বাড়ির লোকজন আসাদুজামানের বাড়ি সংলগ্ন বটতলায় আড্ডা দিচ্ছিল। এমন চিকিৎকার চেচামেচি হলে গ্রামের লোকজন জানত। কিন্তু গ্রামবাসী জানলো মামলা দায়েরের পর। 

বাদির প্রতিবেশি আশরাফুল ইসলাম ও সিরাজুল হক বলেন, এমন ঘটনা ঘটলে সবার আগে আমাদের জানার কথা। কিন্তু আমরা জানলাম মামলা হওয়ার পর। মূলত কৃষক মন্তাজকে হয়রানী করতে এ মিথ্যা মামলাটি করা হয়েছে দাবি করে তারা উচ্চতর তদন্ত করার আহবান জানান।

মামলায় পুলিশী গ্রেপ্তার এড়াতে দু’মাস ধরে বাড়ি ছাড়া কৃষক মন্তাজ ও তার ছেলে জহেদুল। তার বাড়িতে রয়েছেন জাহেদুলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মোমেনা খানম।

তিনি বলেন, ধান ক্ষেত ছাগল খাওয়া নিয়ে ঝগড়া বাঁধলেই হুমকী দেওয়া হত আমাদেরকে বাড়ি ছাড়া করবে। তারা মিথ্য মামলায় তাই করলো। তিনি এ অন্যায়ের সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান।

ঘটনার দিন বিয়ের বাড়িতে থাকা ওই ওয়াডের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ জানান, ঘটনার দিন তো দূরের কথা ৩/৪ দিন পরও কিছু শুনেনি। তবে পুলিশ আসার পর তিনি জানতে পারেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, মামলাটি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মকবুল হোসেন জানান, মামলাটি পুনঃ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক জানান, খুব ঘটনাটি উচ্চতর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হয়রানী মূলক মামলা কখনই হতে দেওয়া হবে না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত