লাশে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ময়না তদন্তে আত্মহত্যা!

প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০১৭, ১৪:৫১

সাহস ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় গৃহবধূ কনিকা আক্তারের (১৯) লাশ উদ্ধারের সময় শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন থাকলেও ময়নাতদন্ত রিপোর্টে তাঁর মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

কনিকা হত্যা মামলার সাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আপন কুমার মজুমদার আসামিদের সঙ্গে আঁতাত করে তাঁর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বদলে ফেলেছেন- এমন অভিযোগ করে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে নিহতের স্বজনরা। ওই মানববন্ধনে কনিকার বাবা কামালউদ্দিন, মা রীনা আক্তার, মামা শাহজালাল, বোনজামাই আমিনুল ইসলাম বাদল, বোন কানিজ ফাতেমা রুম্পাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে কনিকার মা রীনা আক্তার বলেন, 'গত ২০ জুন আমার মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে খুন হয়। লাশ উদ্ধারের সময় তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা আমার আরেক মেয়ের জামাই বাদল ভিডিও করে রাখে। গত ৮ জুলাই আমার বোন ও মেয়ের জামাইকে নিয়ে খুনির এলাকায় যাই। তখন ওই এলাকার লোকজন আমাদের জানায়, লাশ গুম করার জন্য সন্ধ্যায় কবরস্থানে একটি বড় গর্ত করা হয়। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জের অপরাধ তদন্ত বিভাগের এএসপি মতিউর রহমান আমাদের কাছে থাকা ভিডিও দেখে সবার সামনেই বলেন, এ রকম সেইম কেইস তিনি একাধিক তদন্ত করেছেন। আত্মহত্যায় কখনো গলা কাটতে পারে না। বর্তমান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবুল কালাম আজাদকে তিনি নির্দেশ দেন, ওখানে আত্মহত্যার কোনো আলামত পাইনি। এ খুনের ক্লু উদ্ঘাটনের পাশাপাশি নিহতের দেবর জাহাঙ্গীরকে  আটক করুন।

'অথচ এখন দেখছি কনিকার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যা উল্লেখ করা হয়েছে। ' কনিকার দুলাভাই বাদল মানববন্ধনে বলেন, 'ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কনিকার মৃত্যুর কারণ আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন লোক মারফত জানতে পেরেছি, মামলার সাবেক কর্মকর্তা এসআই আপন সুরতহাল রিপোর্টে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে তিনি এ রিপোর্ট বদলে ফেলেছেন। ' তখন তিনি সাংবাদিকদের কাছে লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকা ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ফটোকপি সরবরাহ করেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ মে উপজেলার খৈতারগাঁও গ্রামের গুলজার হোসেনের ছেলে কুয়েতপ্রবাসী বিপুলের সঙ্গে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার কামালউদ্দিনের মেয়ে কনিকা আক্তারের বিয়ে হয়। গত ২০ জুন শ্বশুরবাড়ি থেকে কনিকার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কনিকার মা বাদী হয়ে তার প্রবাসী স্বামী বিপুল হোসেনসহ দেবর জাহাঙ্গীর হোসেন, শ্বশুর গুলজার হোসেন, বিপুলের বোন রুবি আক্তার, ফারজানা ও তার স্বামী রেজওয়ানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এর মধ্যে রেজওয়ান গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। তাঁদের একজন বিদেশে অবস্থান করছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত