আত্রাইয়ে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত জেলে সম্প্রদায়ের শিশুরা

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০১৭, ১৪:৫৮

মুরাদ চৌধুরী

শিক্ষা, বিদ্যুৎ, রাস্তা-ঘাটসহ সকল উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রসুলপুর গ্রাম। যুগ যুগ ধরে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ গ্রামের জেলে সম্প্রদায়ের শিশুরা। 

উপজেলার ১নং শাহাগোলা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে শতাধিক জেলে পরিবার বসবাস করে। এরা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। প্রতিটি পরিবারই দরিদ্র এবং অধিকাংশ পরিবার পেশায় মৎস্যজীবি। এ গ্রামে সরকাবি বা বেসরকারি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। এ পর্যন্ত কোন মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। ফলে বিদ্যালয়ে গমন উপযোগী অর্ধশতাধিক শিশুরা লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সরকার দেশের জনগোষ্ঠিকে শতভাগ শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে কাজ করছে। পাশাপাশি কাজ করছে বেসরকারি সংগঠনগুলোও। এ ক্ষেত্রে অনেকটা সফলতা এলেও এখনও পিছিয়ে রয়েছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রসুলপুর গ্রামের জেলে পাড়ার কোমলমতি শিশুরা।

জানা যায়, রসুলপুর গ্রামে শুধু একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রসুলপুর বামাকালী মন্দির রয়েছে। এ পর্যন্ত কোন মন্দির ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। নেই কোন প্রাইভেট পাঠশালাও। এই গ্রামে কোন মন্দির ভিত্তিক স্কুল না থাকায় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার অসংখ্য কোমলমতি শিশু।

পার্শ্ববর্তী ভবানীপুর গ্রামে মন্দির ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও ছোট্ট কোমলমতি শিশুদের যাতাযাতের দূরুত্ব বেশী হওয়ায় তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

রসুলপুর জেলে পাড়া বামাকালী মন্দিরের সভাপতি মিলন চন্দ্র সরকার জানান, আমরা মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে এখানে একটি মন্দির ভিত্তিক স্কুল স্থাপনের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট বেশ কয়েকবার আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।

নাগরিক উদ্যোগের শাহাগোলা ইউনিয়নের দলিত মানবাধিকার কর্মী দিনেশ কুমার পাল জানান, শাহাগোলা ইউনিয়নের বিভিন্ন মন্দিরে স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলেও রসুলপুর জেলে পাড়া বামাকালী মন্দিরে কোন মন্দির ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন না হওয়ায় কোমলমতি শিশুরা শিক্ষা থেকে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। এখানে একটি মন্দির ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা দ্রুত প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে ১নং শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাবু জানান, রসুলপুর জেলে পাড়াতে মন্দির ভিত্তিক একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা হলে এলাকার শিশুরা লেখাপড়ার প্রতি আরো বেশি আগ্রহী হতো এবং তিনি রসুলপুর বামা কালী মন্দিরে একটি মন্দির ভিত্তিক স্কুল প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলার মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের ফিল্ড সুপারভাইজার বাবুল মিয়া জানান, রসুলপুর বামা কালী মন্দিরে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশাকরি দ্রুত এখানে একটি স্কুল স্থাপন হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত