সীমানা নির্ধারণে আইন চায় ইসি

প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০১৭, ১৩:৩৩

সাহস ডেস্ক

জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটার সংখ্যায় সমতা এনে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করতে নতুন আইনের প্রস্তাব দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশের আগের সীমানায় ভোট করার সুযোগ রাখা হয়েছে। সে হিসাবে দশম সংসদ নির্বাচনের আসন সীমানা বহাল রেখেই একাদশ সংসদ নির্বাচন করার ইচ্ছা ইসির।

এ লক্ষ্যে ১৯৭৬ সালের সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ অধ্যাদেশটি বাদ দিয়ে নতুন আইনের খসড়া করছে নির্বাচন আয়োজনকারী  সাংবিধানিক সংস্থাটি।

ইসির আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটির সভাপতি নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম  রবিবার (২৭ আগস্ট) ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০১৭’ এর খসড়া এবং কমিটির সুপারিশ কমিশন সভায় তুলে ধরেন।

কমিশনের বৈঠক শেষে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণ আইনের খসড়া রবিবারের (২৭ আগস্ট) কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। ১৯৭৬ সালের অধ্যাদেশটি বাংলায় ভাষান্তর করা হয়েছে। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও একজন আইন বিশেষজ্ঞের মতামতের পর ইসির চূড়ান্ত অনুমোদন নিয়ে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

ইসি নির্দেশনা দিয়েছে, খসড়া চূড়ান্ত করে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। তবে এখনও আইন পরামর্শক ঠিক করা হয়নি বলে ইসি সচিব জানিয়েছেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা ও সংসদীয় এলাকার আয়তনের ভিত্তিতে ভৌগলিক অখণ্ডতা, প্রশাসনিক সুবিধা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনায় রেখে ‘দ্য ডিলিমিটেশন অব কন্সটিটিউয়েন্সিস অর্ডিনেন্স, ১৯৭৬’ রহিত করে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০১৭’ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। আইন প্রণয়নের পর সীমানা পুনঃনির্ধারণ বিধিমালার খসড়া তৈরি করে তা উপস্থাপন করা হবে।

নির্বাচনী আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করতে হবে দুই পর্যায়ে। ভোটার সংখ্যা ও জনসংখ্যার সম বিভাজনের ভিত্তিতে প্রথমে জেলা পর্যায়ে আসন বণ্টন করে পরে বরাদ্দ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হবে।

সর্বশেষ আদমশুমারির ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশের এক বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে। প্রকাশের আগে ভোটের তফসিল হলে নির্বাচন পরবর্তী এক বছরের মধ্যে সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ করতে হবে।

খসড়ার ৭ ধারায় বলা হয়েছে, সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সীমানা পুনঃনির্ধারণ হওয়ার পর থেকে পরবর্তী আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রাপ্তির মধ্যবর্তী সময়কালে বা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে চূড়ান্তভাবে প্রকাশের পর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হলে সর্বশেষ নির্ধারিত সীমানার ভিত্তিতে সেই ভোট হবে।

এক্ষেত্রে কমিশন নির্বাচনী এলাকার আয়তন ও অবস্থান হুবহু ঠিক রেখে শুধু প্রশাসনিক এলাকার পরিবর্তন হালনাগাদ করে সরকারি গেজেট প্রকাশ করবে।

২০১১ সালে সর্বশেষ পঞ্চম আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিদ্যমান অধ্যাদেশ অনুযায়ী জনসংখ্যার যথাসম্ভব সমতা রেখে দশম সংসদ নির্বাচনে আদমশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আসন বিন্যাস করা হয়। পরবর্তী আদমশুমারির প্রতিবেদন হবে ২০২১ সালে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রস্তাবিত আইন পাস হলে একাদশ সংসদ নির্বাচন বিদ্যমান সীমানাতেই হতে পারবে। শুধু বিলুপ্ত ছিটমহল ও নতুন উপজেলা বা প্রশাসনিক কিছু এলাকা সংসদীয় আসনের যুক্ত করলেই চলবে। সেক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনার দরকার পড়বে না।

২০০১ সালের নির্বাচনের সময় ১৯৯৫ সালের সীমানার গেজেট বহাল রাখা হয়েছিল। তবে ১৯৮৪, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে ১৩৩ সংসদীয় আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। দশম সংসদে ছয়টি নীতিমালা অনুসরণ করে ৫০টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে আসন পুনর্বিন্যাস করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত