রোহিঙ্গাপ্রবণ ৪ জেলায় ইসির কঠোর নজরদারি

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৮:০৯

সাহস ডেস্ক

ভোটার তালিকা হালনাগাদে রোহিঙ্গাপ্রবণ ৪ জেলার ৩২ উপজেলা কঠোর নজরদারিতে রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। 

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বলেন, নিবন্ধন কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওই এলাকার ভোটার আবেদন ফরমসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই, অনুসন্ধান ও পরিদর্শনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার হতে না পারে সেজন্য কমিশন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল নামায় রোহিঙ্গাপ্রবণ কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও চট্টগ্রামের ৩২টি উপজেলায় নতুন ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমের সময়সীমা আরো ১৫দিন বাড়িয়ে ২০ নভেম্বর করা হয়েছে। যাতে ওই এলাকায় রোহিঙ্গারা ভোটার হতে না পারে, ভোটার নিবন্ধন ফরম সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা যায়। তবে নিবন্ধনযোগ্য ভোটারের ডাটা এন্ট্রি ও আপলোডসহ ভোটার তালিকার খসড়া ও চূড়ান্তভাবে প্রকাশের তারিখ অপরিবর্তিত থাকবে বলে তিনি জানান।

কমিশন যে ৩২টি উপজেলাকে বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে এরমধ্যে- কক্সবাজার জেলার ৮টি, বান্দরবানের ৭টি, রাঙামাটির ৮টি ও চট্টগ্রামের ৯টি উপজেলাকে কঠোর পর্যবেক্ষণে রেখেছে ইসি। 

কক্সবাজারের উপজেলাগুলো হলো কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, টেকনাফ, রামু, পেকুয়া, উখিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া। বান্দরবানের উপজেলাগুলো হলো বান্দরবান সদর, রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি। রাঙামাটির উপজেলাগুলো হলো রাঙামাটি সদর, লংগদু, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বরকল। চট্টগ্রামের উপজেলাগুলো হলো বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, রাঙ্গুনিয়া ও কর্ণফুলী।

এসব এলাকায় চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যাতে রোহিঙ্গারা ভোটার না হতে পারে, সে জন্য কমিশন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে সচিব জানান।

কমিশন সূত্র জানায়, এসব এলাকায় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিশেষ কমিটির সম্বয়ের মাধ্যমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করছে ইসি। এর পরও ভুয়া মা-বাবা, নাগরিক সনদ দেখিয়ে ভোটার হওয়ার তৎপরতা চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা।

ইসির সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার বিষয়ে যদি কেউ তাদের পক্ষে মিথ্যা তথ্য প্রদান অথবা মিথ্যা কাগজপত্র ইস্যু অথবা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা প্রদান অথবা সংশ্লিষ্ট কারো গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার কথা বলা হয়েছে। 

ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা ঠেকাতে ১৪ সদস্যের বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশেষ কমিটির সদস্য হলেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাচন কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানার ওসি, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রতিনিধি, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রতিনিধি, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ (পার্বত্য জেলার ক্ষেত্রে), হেড ম্যান (পার্বত্য জেলার ক্ষেত্রে), কারবারি (পার্বত্য জেলার ক্ষেত্রে) ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে গত ২৫ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহ শেষে সেসব তথ্য ২০ আগস্ট থেকে নিবন্ধনকেন্দ্রে কম্পিউটার ডাটা এন্ট্রির কাজ তিন ধাপে শুরু হয়। ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা এবং ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত