হত্যার অভিযোগে নওগাঁয় র‌্যাবের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১২:৪২

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর মান্দায় মাজহারুল ইসলাম জিএসকে (৩০) আটকের পর হত্যার অভিযোগে র‌্যাবের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় র‌্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সাঈদ আব্দুল্লাহ আল মুরাদসহ অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জন র‌্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। 

আগামী ২১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) মামলার আদেশের দিন তারিখ ধার্য রয়েছে।

এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) মুখ্য বিচারিক হাকিম নওগাঁ-২ আদালতে নিহত মাজহারুলের স্ত্রী শামিমা আক্তার এই মামলা দায়ের করেন। স্থানীয় নয় ব্যক্তির যোগসাজশে র‌্যাব সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, মান্দা উপজেলার কাঁশোপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, আব্দুল মজিদ, আব্দুস সাত্তার, সেলিম উদ্দিন ও রাজ্জাক হোসেন, ভরট্টো কাঠেরডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমান মোল্লা এবং পার কুলিহার গ্রামের রফিকুল ইসলাম।

মামলার অভিযোগ, স্থানীয় এসব ব্যক্তির সঙ্গে মাজহারুলের পূর্ব শত্রুতার জেরে তাদের যোগসাজশে জয়পুরহাট র‌্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডারসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন র‌্যাব সদস্যেরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। 

বাদীর আরজি সূত্র জানায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কাঁশোপাড়া গ্রামের শহিদুলের সঙ্গে উপজেলার সিংগী বাজারে যান। সন্ধ্যা ৭টায় সিংগী বাজারের পঁচা সরদার মোড় থেকে ৭-৮টি মোটরসাইকেলে করে আসা সাদা পোশাকধারী ২০-২৫ জন ব্যক্তি র‌্যাব পরিচয় দিয়ে মাজহারুলকে আটক করে মারধর করে। পরে তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দোতলায় একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। রাত প্রায় ২টা পর্যন্ত তার ওপর নির্যাতন চলে। রাত ২টায় রক্তাক্ত অবস্থায় মাজহারুলকে বাড়ি থেকে নিয়ে যান তারা। ওই দিন ভোরে র‌্যাব সদস্যরা মাজহারুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন সকালে খোঁজ নিয়ে মাজহারুলের মৃত্যুর খবর পান স্বজনেরা।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মান্দা থানায় মামলা করতে চাইলে মান্দা থানা পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। এ ঘটনায় সোমবার মুখ্য বিচাররিক হাকিম নওগাঁ-২ আদালতে মামলা করেন।

সোমবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: আব্দুল মালেক আমলী আদালত নং ০২ নওগাঁয় র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট কোম্পানি কমান্ডার সাঈদ আব্দুল্লাহ আল মুরাদসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে শামিমা আক্তার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম জানান, র‌্যাব সদস্যরা জানতে পারেন মান্দার একটি জায়গায় অস্ত্র কেনাবেচা করা হবে। এর ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে মাজাহারুল ইসলাম জিয়াস আলী নামক একজনকে আটক করা হয়। তার কাছে থাকা ৮টি গুলি পাওয়া যায়। অস্ত্র কোথায় আছে জানতে চাইলে মাজাহারুল বলেন বাড়িতে আছে। তাকে বাড়িতে নিয়ে তল্লাশি করে অস্ত্র পাওয়া যায়নি। এরপর অন্য জায়গায় আছে বলে ৮-১০টি স্থানে র‌্যাব  সদস্যদের ঘুরিয়ে সে জায়গাগুলোতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র পাওয়া যায়নি। পরে তাকে অস্ত্র পাওয়া না গেলে গুলিসহ গ্রেপ্তার করে দাপ্তরিক কাজে রাজশাহী র‌্যাব কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়। পথে সে অসুস্থ হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাকে মারধর করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। 

বাদীর আইনজীবী শহিদুল ইসলাম বেলাল বলেন, মুখ্য বিচারিক হাকিম আব্দুল মালেক আবেদন শুনেছেন। বিষয়টি আদেশের অপেক্ষায় রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত