আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছি: জয়

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:০৪

সাহস ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তাঁর তথ্যপ্রযু্ক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘উন্নত বিশ্ব যখন তাদের প্রতিবেশী দেশের মানুষের বিপদে এগিয়ে আসে না তখন আমরা এগিয়ে এসেছি। পাশের দেশ মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা নাগরিকদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছি। আমরা তাদের সাহায্যের জন্য কারও কাছে হাত পাতিনি।

শনিবার সাভারে শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন কেন্দ্রে ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন’ (সিআরআই)  আয়োজিত ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘বিশ্বের কারও থেকে সাহায্য নেইনি। বলেছি, আমরা ১৭ কোটি মানুষকে খাবার দিতে পারলে এক কোটি মানুষ কোনও সমস্যাই নয়।’

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা  বলেন, ‘আজ তরুণরা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, দেশের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছে, তা আগে দেখা যায়নি। ইয়ং বাংলা দেশের তরুণদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। দেশের জন্য কাজ করতে উৎসাহী করেছে। তাদের কাজ থেকে আমি নিজেও উৎসাহিত হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘তরুণরা আমাদের ভবিষ্যৎ নেতা। আমরা তাদের সুযোগ দিতে চাই। তাদের কাজের স্বীকৃতি দিতে চাই। তরুণদের প্রতি আমার আহ্বান, তাদের মধ্যে যেন স্বাধীনতার চেতনা থাকে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যেন স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত করে। স্বাধীনতার চেতনা থাকলে আত্মবিশ্বাস থাকবে।’

তরুণদের উদ্দেশে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আপনারা স্বাধীনতার চেতনা কখনও ভুলবেন না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও  ভুলতে দেবেন না।’ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পঁচাত্তরের আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় আসে। তারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশ হিসেবে পরিচিত করেছিল। আমাদের কিছু সুশীল সমাজের লোক আছে, যারা বিদেশে গিয়ে ছবি তুলে বাংলাদেশকে দেখিয়ে এনজিওর নামে টাকা আনতো। এটা ছিল তাদের ব্যবসা। তারা কি দেশের প্রতিবন্ধীদের জন্য কোনও কাজ করেছে? তারা কি মেয়েদের ফুটবল খেলা শিখিয়েছে? তারা তো টাকা বিদেশে পাচার করেছে।’

অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশকে বলা হতো ব্যর্থ রাষ্ট্র। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের তুলনা করা হতো। বাংলাদেশ জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। কিন্তু এখন নেক্সট ইলেভেন অর্থনীতির দেশের একটি হচ্ছে বাংলাদেশ।’

বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার মতো উন্নত না হওয়ার কারণ উল্লেখ করে জয় বলেন, ‘মালয়েশিয়াকে যে দলটি দেশ স্বাধীন করেছিল, তারা টানা ৪/৫ টার্ম ক্ষমতায় ছিল। এ কারণেই তারা  উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে পেরেছে। কিন্তু বাংলাদেশের ৪৬ বছরের স্বাধীনতায় মাত্র ১৬ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। আমরা টানা মাত্র ৮ বছর ক্ষমতায় আছি। এতেই দেখুন দেশের কী পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে।’ এ সময় তিনি দেশের তরুণ সমাজকে সহযোগিতার জন্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

‘আমরা পারি, আমরা পারব’এমন মন্তব্য করে জয় বলেন, ‘কেউ কল্পনা করতে পারেনি আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারব। বিশ্বব্যাংক ভাবতে পারেনি আমরা পারব। তারা আমাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছিল। মনে করেছিল, আমরা বসে যাব। তাদের কাছে গিয়ে হাত-পা ধরব। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি, যারা যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে, তারা কারও কাছে মাথা নত করে না।’

ইতিহাস বিকৃতির সমালোচনা করে জয় বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। খালেদা জিয়া তো বলেই ফেলেছেন, ত্রিশ লাখ শহীদ হয়নি। এই মিথ্যা প্রচারের সুযোগ যেন আমাদের দেশে আর না আসে। মিথ্যা প্রচারের সুযোগ আপনারা আর দেবেন না। কারণ যে জাতি নিজের শহীদদের ত্যাগের কথা ভুলে যায়, সেই জাতি এগুতে পারে না।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত