চীনা এক্সিম ব্যাংকই পদ্মা সেতুর রেল সংযোগে অর্থ দিচ্ছে

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:১৯

সাহস ডেস্ক

সব জটিলতা কাটিয়ে চীনের এক্সিম ব্যাংকই বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই এ সংক্রান্ত ঋণচুক্তির খসড়া সরকারের কাছে পাঠাবে এক্সিম ব্যাংক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) পাঠানো ওই ঋণচুক্তির খসড়া যাচাই-বাছাই, সংযোজন, বিয়োজন ও পরিমার্জন শেষে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চুক্তি স্বাক্ষর হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয় ও ইআরডি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকা থেকে খুলনার (রেলপথে) দূরত্ব কমবে ২১২ কিলোমিটার। এ রেলপথ দিয়ে খুলনা যেতে সময় লাগবে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা।

এ বিষয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ একটি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। শুভ সংবাদ হচ্ছে- অর্থায়নের বিষয়ে চীনের সঙ্গে জটিলতা কেটেছে। তবে এখনও চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। আশা করছি নভেম্বরের শেষ অথবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ইতিবাচক সংবাদ পাবো। অর্থাৎ, চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে চীনের এক্সিম ব্যাংক।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পের মূল কাজ এখনও শুরু হয়নি। তবে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ বলা যায় শেষ পর্যায়ে। ঋণচুক্তি হলে কাজ পুরোদমে শুরু হবে।’

এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে রেলপথ চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাতায়াতের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হবে। এ লক্ষ্যেই এই মেগা প্রকল্পটি নিয়েছে সরকার। এর ফলে পরিবহন খাত এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটবে। আঞ্চলিক সংযোগ বিশেষ করে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হবে এ রুট।’

২০১৬ সালের ৩ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন করা হয় পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি। এতে ব্যয় ধরা হয় ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। শুরুতে এ প্রকল্পে শতভাগ অর্থায়নে সম্মত হলেও পরে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা ঋণ দিতে সম্মত হয়।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, অর্থায়ন নিয়ে জটিলতা থাকায় এতদিন ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়া প্রকল্পের কাজ সেভাবে শুরুই হয়নি। প্রথম ধাপে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুরের একাংশে ভূমি অধিগ্রহণ চলছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে অধিগ্রহণ করা জমি বুঝে পেয়েছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।

ভূমি অধিগ্রহণের দ্বিতীয় ধাপের কাজ চলছে ফরিদপুরের বাকি অংশ, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোরে। এ চার জেলার সব কটিতেই অধিগ্রহণের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে অধিগ্রহণ পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়েছে শুধু যশোরের। দ্বিতীয় ধাপে এর বাইরে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ আর এগোয়নি।

প্রকল্প সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় চারটি সেকশনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত নতুন ব্রডগেজ লাইন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত কাজ শেষ করে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার প্রথম দিন থেকেই রেলপথও চালুর পরিকল্পনা করছে সরকার। নতুন রুটটি হবে ঢাকা থেকে গেন্ডারিয়া হয়ে মাওয়া-ভাঙ্গা-নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত। প্রকল্পটি ২০২২ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত