বিচারপতি সিনহার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০১৭, ১০:৪৫

সাহস ডেস্ক

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র আজ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটি নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। ঢাকা ত্যাগের পূর্বে এক খোলা চিঠিতে বিচারপতি সিনহা দাবী করেন তিনি অসুস্থ নন। ছুটি শেষে তিনি দেশে ফিরে আসবেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন।

২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এস কে সিনহা। বয়স অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে ৮১ দিন আগেই তার কার্যকাল শেষ হয়।

উচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে গত জুলাই মাসে রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ে রাষ্ট্র, সমাজ, রাজনীতি, নির্বাচন কমিশন, সংসদ ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে নানা পর্যবেক্ষণ দেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। রায়ের ওই পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রধান বিচারপতির সমালোচনায় সরব হন সরকার দলীয় মন্ত্রী-নেতারা। এমনকি এসব পর্যবেক্ষণ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রত্যাহারের জন্য প্রধান বিচারপতির প্রতি দাবি জানানো হয়। রায় নিয়ে এই টানাপড়েনের মধ্যেই ১৩ অক্টোবর এক মাসের ছুটিতে যান তিনি। ছুটিতে থাকা অবস্থায় বিদেশে বসে তিনি পদত্যাগ করলেন।

বিচারপতি সিনহা ছুটি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ ওঠার কথা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

সর্বোচ্চ আদালত জানায়, ওই সব অভিযোগের ‘গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা’ তিনি না দিতে পারায় সহকর্মীরা তার সঙ্গে এজলাসে বসতে নারাজ।

গত অক্টোবরে বিচারপতি সিনহা ছুটিতে যাওয়ার পর আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্বভার দেন রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদ।

আর বিচারপতি সিনহা পদত্যাগ করায় রাষ্ট্রপতি এখন সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন বলে গত শনিবার জানিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রধান বিচারপতি তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে ক্ষেত্রমত অন্য কোনো ব্যক্তি অনুরূপ পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা প্রধান বিচারপতি স্বীয় কার্যভার পুনরায় গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারকের মধ্যে যিনি কর্মে প্রবীণতম, তিনি অনুরূপ কার্যভার পালন করিবেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মত আইনমন্ত্রী আনিসুলক হকও ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, যতদিন নতুন প্রধান বিচারপতি শপথ না নেবেন, ততদিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ আদালতের কর্তৃত্ব আবদুল ওয়াহহাব মিঞার হাতেই থাকছে।

সাহস২৪.কম/ আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত