বন্ধুর লাশের পাশে ২ মাস ঘুমিয়েছেন মামুন!

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০১৭, ১২:৩৩

পাবনা প্রতিনিধি

বন্ধু রবিউল ইসলামকে হত্যার পর শোবার ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখে আরেক বন্ধু মামুন শেখ। এভাবে কেটে গেছে প্রায় দুই মাস। বুঝতে পারেননি বাড়ির মানুষ বা এলাকাবাসী। সবাই জানে হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়েছে রবিউল। কিন্তু ফাঁকি দিতে পারেননি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে। পুলিশের জালে ধরা পড়লো মামুন। স্বীকার করলেন বন্ধুকে হত্যার কথা, সন্ধান দিলেন বন্ধুর মৃতদেহের।

পাবনার সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের উলাট গ্রামে এমন লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে। নিখোঁজের প্রায় দুই মাস পর শুক্রবার সকাল এগারোটার দিকে মামুন শেখের শোবার ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা কলেজছাত্র রবিউল ইসলাম (২২) এর গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এর আগে অপরহরণ ও হত্যার সাথে জড়িত মূল আসামি মামুন শেখ (২৪) সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এটি পরিকল্পিত হত্যা বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত মামুন উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের উলাট গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক শেখের ছেলে। গ্রেপ্তার অন্য চারজন একই গ্রামের হৃদয়, শাহিন, মমিন ও মিঠু।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে সুজানগর উপজেলার মালিফা-সেলিম রেজা হাবিব ডিগ্রি কলেজের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মানিকহাট ইউনিয়নের উলাট গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে রবিউল ইসলাম। ২১ সেপ্টেম্বর ভোরে পরিবারের লোকজন দেখতে পায় রবিউল তার ঘরে নেই। খোঁজ না পেয়ে পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন রবিউলের বাবা আব্দুল মালেক। এরমধ্যে মোবাইলে ফোন করে ও এসএমএস দিয়ে রবিউলের পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। টাকা না পেলে রবিউলকে হত্যার হুমকিও দেয় তারা। নিখোঁজ রবিউলের সন্ধান দাবিতে সুজানগরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে তার সহপাঠি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, এলাকাবাসী ও স্বজনরা।

এদিকে ৫ অক্টোবর নিখোঁজ রবিউলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে হৃদয় নামের এক যুবককে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে সুজানগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর বিভিন্ন সময় এজাহার নামীয় আসামি হৃদয়সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ও মোবাইল ট্র্যাকিং করে মূল আসামি মামুন শেখকে গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তিতে শুক্রবার সকালে মামুনের শোবার ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা রবিউলের গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম জানান, মূলত প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কলেজ ছাত্র রবিউলকে প্রথমে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে তার বন্ধু মামুন শেখ। পরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত