বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে প্রমাণ হল গণশুনানি অর্থহীন: ক্যাব

প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৮:৫১

সাহস ডেস্ক

গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ফের বাড়ানোর কঠোর সমালোচনা করেছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।

বিইআরসি বলেছে, নতুন এ হার কার্যকর হবে আগামী ডিসেম্বর থেকে। দাম বাড়ানো হয়েছে কেবল খুচরা পর্যায়ে, পাইকারিতে বিতরণ কেন্দ্রগুলোর জন্য বিদ্যুতের দাম তাতে বাড়ছে না।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত আটবার বাড়ানো হল বিদ্যুতের দাম।

চলতি বছর মার্চে বিভিন্ন খাতে গ‌্যাসের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পর জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বিদ্যুতের দামও সমন্বয় করার কথা বলেছিলেন।

এরপর এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গত সেপ্টেম্বরে বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে শুনানির আয়োজন করে। সেখানে পাইকারিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম প্রায় ১৫ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে ৬ থেকে সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব আসে।

এবারও শুনানিতে বিতরণ সংস্থাগুলোর দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হয় ভোক্তাদের পক্ষ থেকে। ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) পক্ষ থেকে দেওয়া দাম কমানোর একটি প্রস্তাব নিয়েও শুনানি হয়।

বৃহস্পতিবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, এবারও দাম বৃদ্ধির যুক্তি হিসেবে তারা বলল- সবকিছুরই দাম বাড়ে তেমনি বিদ্যুতেরও দাম বাড়ানো হয়েছে। আর গণশুনানি অকার্যকার ও অর্থহীন প্রতীয়মান হল, গণশুনানি এক ধরনের প্রহসন।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর গণশুনানিতে অংশ নিয়ে ভোক্তা সংগঠন ও বামদলগুলো বিদ্যুতের দাম কমানোর পক্ষে তাদের যুক্তি তুলে ধরে।

বিদ্যুতের দাম কমানোর প্রস্তাব নিয়ে ব্যতিক্রমী এই গণশুনানি হয়েছিল বিদ্যুতের দাম কমানোর প্রস্তাব নিয়ে ব্যতিক্রমী এই গণশুনানি হয়েছিল
সেখানে আয়-ব্যয় সমন্বয়ের জন্য দাম না বাড়িয়ে বরং এক পয়সা থেকে ৬ পয়সা পর্যন্ত দাম কমানো যেতে পারে বলে হিসাব দেখান ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা এম শামসুল আলম; যার কিছুটা মেনে নেন পিডিবির কর্মকর্তারা।

বিদ্যুতের উৎপাদন, বিতরণ ও সঞ্চালনে ‘অযৌক্তিকভাবে’ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেন শামসুল আলম।

মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবকে তারা কেউই যৌক্তিক প্রমাণ করতে পারেনি। তারপরও মূল্য কী করে বাড়ে? এটা কেবল আমাদের মতো দেশের প্রেক্ষাপটেই সম্ভব, এর সাথে ন্যায়-নীতি, ভোক্তাদের স্বার্থ-অধিকার ও আইনের কোনো সম্পর্ক নেই।

গণশুনানিতে অংশ নেওয়া সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, এই দাম বৃদ্ধি অনৈতিক। আমরা অচিরেই গণবিরোধী এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করব।পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক মোর্চা আগামী ৩০ নভেম্বর হরতালের ঘোষণা দেয়।

গণশুনানির প্রসঙ্গ টেনে প্রিন্স বলেন, আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে গণশুনানিতে আমরা এটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে, এ মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম কমানো সম্ভব, কিন্তু সেটা না করে বরং বাড়ানো হলো। এর মধ্যে দিয়ে জনস্বার্থ না দেখে গুটিকয়েক লুটেরা, দুর্নীতিবাজদের স্বার্থই রক্ষা করা হলো।

সাহস২৪.কম/আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত