১১ ডিসেম্বর শিবগঞ্জ মুক্ত দিবস

প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:৪৪

১১ ডিসেম্বর শিবগঞ্জ উপজেলার জন্য স্বরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এদিনে পাক-হানাদার বাহিনীর কবল থেকে শিবগঞ্জ উপজেলা তৎকালিন শিবগঞ্জ থানা মুক্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এদিন মুক্তিযোদ্ধাদের আসার সংবাদে আগের রাতেই শিবগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যায় পাক বাহিনী।

এদিন দুপুরে বিজয় উল্ল্যাস আর ‘জয় বাংলা’ স্লোগাণে শিবগঞ্জ শহরের দখল নেন মুক্তিযোদ্ধারা। ৭নং সেক্টরের অথীনস্থ শিবগঞ্জকে হানাদার মুক্ত করতে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে জীবন দিয়েছেন অনেকে। অনেক মা-বোন হারিয়েছেন সম্ভ্রম। শিবগঞ্জের বিনোদপুর, শাহবাজপুর, দূর্লভপুর, শাহবাজপুর, চককীর্তি সহ বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া গেছে গণকবর।

সেদিন মানুষ বিজয় উল্লাস আর মুক্তিবাহিনীকে স্বাগত জানালেও তাদের মনে কিছু ভয় কাজ করছিল। আবার যদি হানাদাররা আসে। প্লাটুন কমান্ডার নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল প্রথমে থানায় ঢুকে এবং অবাঙ্গালী পুলিশকে আত্মসমর্পণ করিয়ে থানা হাজতে আটকে রাখে। এসময় থানার অস্ত্রগার দখলে নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। 
নজরুল ইসলাম বলেন, এসময় স্কুল শিক্ষক জাকারিয়ার নেতৃত্বে সাধারণ মানুষের একটি দল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে আসে। জাকারিয়া মাষ্টার বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত একটি জাতীয় পতাকা আমার হাতে তুলে দেন। আমি থানার ভেতরে প্রথম মুক্ত শিবগঞ্জে পতাকা উড়াই। এ ঘটনা নিশ্চিত করেন সতীর্থ মুক্তিযোদ্ধা ও শিবগঞ্জ উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বজলার রশিদ সনু।

শিবগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার ও সাবেক বিএনপি দলীয় হুইপ অধ্যাপক শাহজাহান মিঞা বলেন, আমার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের বড় একটি দল শিবগঞ্জে ঢোকে ১১ ডিসেম্বর বিকেলে। পাক বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে আমার পিতা ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ থানায় বন্দি ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা তাকে মুক্ত করেন।

৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে সোনামসজিদের দিক থেকে যুদ্ধ করতে করতে সেদিন বিকেলই থানা সদরে পৌঁছান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা। বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম মইনুদ্দিন আহমেদ মন্টু ডাক্তারের নেতৃত্বেও মুক্তি বাহিনীর একটি দল প্রায় একই সময় শিবগঞ্জে ঢুকে পড়েন। পরদিন ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের দিকে এগুতে থাকেন এবং মহানন্দা নদীর তীরে শহরের রেহাইচর নামক স্থানে পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ১৪ ডিসেম্বর ভোরে শহীদ হন। তাকে নিয়ে এসে সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত