নদীগর্ভে বিলীনের পথে সিরাজগঞ্জের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ প্রতিরোধ স্মৃতিফলক

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৪:৪৮

সোহাগ লুৎফুল কবির

সিরাজগঞ্জের উল্লপাড়া উপজেলার ঘাটিনা রেলব্রিজ এলাকায় অবস্থিত জেলার প্রথম মুক্তিযুদ্ধ প্রতিরোধ স্মৃতি ফলকটি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। ঘাটিনা রেলওয়ে সেতু; বিজয়ের ৪৭ বছর পরেও সিরাজগঞ্জ তথা উল্লাপাড়াবাসীর কাছে স্বাধীনতার প্রতীক ও অনুপ্রেরণার নাম। এখানে সংঘটিত হয় সিরাজগঞ্জের প্রথম সম্মুখ মুক্তিযুদ্ধ।

এবারের বন্যায় স্মৃতিফলকের মূলঅংশ ভেঙ্গে করতোয়া-ফুলজোড় নদীপারে পড়ে আছে। এমন অবস্থায় স্মৃতিফলকটি সংস্কারের নেই কোন উদ্যোগ।

একাত্তরে হানাদার বাহিনী পাবনা ও বগুড়ায় অবস্থান নিয়ে ঈরশর্দী থেকে ট্রেনে করে সিরাজগঞ্জে যওয়ার পরিকল্পনা করে। ২৩ এপ্রিল তৎকালীন সিরাজগঞ্জ মহকুমা প্রশাসক শামছুদ্দিন ও পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের কমান্ডার আব্দুল লতিফ মির্জার মাধ্যমে এ খবর পৌঁছে যায় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে। ২৪ এপ্রিল দুপুরে সেতু এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা সাধারণ অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে পাক-হানাদারদের উপর। প্রায় তিন ঘণ্টার মুখোমুখি যুদ্ধে ১৫ পাকসেনা মারা গেলে পিছু হটে শত্রুরা। সেদিনের বিজয় গাঁথার কথা স্মরণ করে সূর্যসন্তানরা। তবে আজো অবহেলিত সিরাজগঞ্জের প্রথম সম্মুখ মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হওয়া এই স্মৃতি বিজড়িত ঘাটিনা রেলওয়ে সেতু এলাকা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, খবর পেয়ে ওইদিন রেললাইন তুলে ফেলেছিলাম। এজন্য তারা ব্রিজ পার হতে পারেনি। ট্রেন থেকে নেমে ব্রিজে উঠার চেষ্টা করলে ঠিক ওই মুহূর্তে পাক হানাদার বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে শুত্রুদের ঘায়েল করা হয়। সিরাজগঞ্জ জেলার প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করি।

এদিকে ঘাটিনা রেলওয়ে সেতুর পূর্ব পাড়ে স্মৃতির মিনার স্থাপনে উদ্দ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম।

তিনি জানান, এখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে যাতে আমাদের পরের প্রজন্ম ও উত্তরসূরী যারা আছেন তারা এটি দেখে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করতে পারবে। নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে এই বীরত্বগাঁথা জায়গাটি দ্রুত সংরক্ষণের দাবী এলাকাবাসীর।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত