রংপুরের ভোট নিয়ে ইসির প্রশংসায় পর্যবেক্ষকরা

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:২২

সাহস ডেস্ক

রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অনিয়মহীন হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার প্রশংসা করেছে পর্যবেক্ষকদের একটি মোর্চা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডাব্লিউজি)

রংপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে ইডব্লিউজির পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে আজ শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে জানানো হয়, ছোটখাটো কোনো অনিয়মনের ঘটনাও তাঁরা খুঁজে পাননি। সিটি নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ৭০ ভাগ ভোট পড়েছে এবং নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোট কার্যক্রমে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন বলে পর্যবেক্ষণে পেয়েছে ইডব্লিউজি।

ইডব্লউজির পরিচালক মো. আবদুল আলীম বলেন, ‘কুমিল্লাতেও কিন্তু আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছিলাম। সেখানে ছোটখাটো কয়েকটা ঘটনা অবজার্ভ করেছিলাম। কিন্তু আমরা এখানে যে কেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি, এখানে আমরা ছোট্ট একটা ঘটনাও খুঁজে পাইনি। কেউ জাল ভোটের চেষ্টা পর্যন্ত করে নাই।’

স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচনগুলোর সঙ্গে তুলনা করে এই নির্বাচনকে এ যাবৎকালের অন্যতম সেরা নির্বাচন বলে উল্লেখ করেন মো. আবদুল আলীম। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এই নির্বাচন অংশীজনদের আস্থা আরো বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে।

রসিক নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইডব্লিউজির সদস্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচনের শুরু থেকে ফল প্রকাশ পর্যন্ত আমরা এলাকায় ছিলাম। স্থানীয় জনসাধারণ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ যাঁরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন, তাঁদের অনেকের সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে এ জাতীয় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি, কিংবা কেউ শুনেছেন বলেও আমাদের জানাননি। সে জন্য ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ মনে করে, এ জাতীয় বক্তব্য হয়তো রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রদান করা হয়েছে এবং তাঁদের এই অভিযোগের সঙ্গে মাঠপর্যায়ের কোনো সম্পর্ক নেই।’

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, রংপুর সিটি নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে ইভিএমের পরীক্ষামূলক ব্যবহার হয়েছে। এখানে সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ভোটগ্রহণের ১৩ মিনিটের মাথায় এই কেন্দ্রের ফলাফল পাওয়া গেছে।

 ‘আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইভিএম ব্যবহার করলে স্বল্পতম সময়ে ফলাফল পাওয়া সম্ভব এবং এর মাধ্যমে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান হবে।’ যোগ করেন ইডব্লিউজির এই সদস্য।

এক প্রশ্নের জবাবে ইডব্লিউজির সদস্য মো. আবদুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন সংক্রান্ত বিধি-বিধানগুলো রাজনৈতিক দলসহ সকলের উচিত শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখা ও পালন করা এবং এগুলো তাদের রাজনৈতিক চরিত্রের মধ্যে সম্পৃক্ত করবেন বলে আমরা নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করি।’

একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যেসব পূর্বশর্ত তার সব কটিই রংপুর সিটি নির্বাচনে তা বিদ্যমান ছিল বলে মন্তব্য করেন আবদুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘এগুলোকে চর্চায় আনতে হবে। নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল এবং জনগণ তাদের দিক থেকে যে সদিচ্ছা দেখিয়েছেন, নির্বাচনে সকলের যেমন স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী জাতীয় নির্বাচনেও এ ধরনের অবস্থা বিরাজমান থাকবে বলে আশা করা যায়।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৯৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ইডব্লিউজি ১৫টি ওয়ার্ডের ২৬টি (১৩.৫ শতাংশ) ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছে। ভোটগ্রহণ শুরুর সময় ইডব্লিউজির পর্যবেক্ষকরা ৯৩ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট, ৯৫ দশমিক ১ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে বিএনপি মেয়র প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট এবং ৯২ দশমিক ৯ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের দেখতে পেয়েছেন।

সাহস২৪.কম/আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত