গাইবান্ধায় তীব্র শীতে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০১৮, ১৩:৪২

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

টানা কয়েক দিনের শৈত্যপ্রবাহে চরম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে গাইবান্ধার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষদের মধ্যে। গত কয়েক দিন থেকে অব্যাহত রয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা এই শীতে দুর্বিষহ দিনাপাতিত করছে। শুধু মানুষই নয় গৃহপালিত পশু-পাখিসহ প্রাণীকুলও পড়েছে বিপর্যস্ত অবস্থায়। 

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেখা পাওয়া যায় না সূর্যের। কোন কোন দিন আবার দেখাই মেলে না। ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। প্রচণ্ড শীতের কারণে খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করেছেন অসহায় শীতার্থরা। 

অপরদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়ে গেছে শীতবস্ত্রের দাম। রাস্তার ফুটপাতের দোকানগুলোত ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। তীব্র শীতের কারণে মৌসুমী রোগের পাশাপাশি নানা ধরণের রোগব্যাধিও বেড়ে গেছে। 

গাইবান্ধার সাত উপজেলার হাসপাতালগুলো ঘুরে দেখা গেছে শীতের তীব্রতার কারণে শীতজনিত নানা রোগ বিশেষ করে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এসব রোগে আক্রান্তদের মধ্যে শিশু-বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন ভিড় করছেন সদর হাসপাতালসহ ছয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে। এছাড়া অনেকে কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। এপর্যন্ত শীত জনিত কারণে গাইবার সাত উপজেলা মিলে পাঁচজন মারা গেছেন বলে স্বজনদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ. কা. মো. রুহুল আমীন বলেন, শুধু মানুষ আর পশু পাখি নয় শীতের প্রভাব পড়েছে মৌসুমি ফসলের উপরেও টানা শৈত্যপ্রবাহের কারণে আলু, সরিষা ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এভাবে শৈত্যপ্রবাহ আর কয়েকদিন চললে এসব ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।

এছাড়াও গাইবান্ধার সাত উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে গ্রামের মানুষেরা শীত নিবারণের জন্য বাড়ির পুরাতন আসবাবপত্র, খড়-কুটা বা পুরাতন কাপড়ে আগুন জ্বালিয়েছেন।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল বলেন, সরকারি ভাবে এই তীব্র শীতে এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে গরম কাপড় ও সাহায্য সহযোগিতা করা সম্ভব নয়। তাই তিনি এনজিও সংস্থা, ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে গাইবান্ধার জেলার সাত উপজেলার ৮২ ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষের মধ্যে প্রায় ৬০,০০০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী আরও বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে গরিব-অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষসহ নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে এসব কম্বল বিতরণ করা হবে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত