দেশে দেশে বাবা

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০১৬, ১০:৫৩

সাহস ডেস্ক

প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বের প্রায় ৭৪টি দেশে এ দিবসটি পালিত হয়। সেই হিসাবে এ বছর আজ পালিত হচ্ছে বাবা দিবস। ১৯০৮ সালে প্রথম বাবা দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

পরে ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুন মাসের তৃতীয় রবিবারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করেন। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রতিবছর জাতীয়ভাবে বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন। এরপর পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও চালু হতে থাকে বাবা দিবস পালনের রীতি।

বর্তমানে বাংলাদেশেও পালিত হয় এ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

বিভিন্ন ভাষায় পিতা
জার্মান ভাষায় পিতা শব্দটি হচ্ছে "ফ্যাট্যা" আর ড্যানিশ ভাষায় "ফার"। আফ্রিকান ভাষায় ‘ভাদের’ হচ্ছেন পিতা! চীনে ভাষায় চীনারা আবার ‘বাবা’ কেটে ‘বা’ বানিয়ে নিয়েছে! ক্রী (কানাডিয়ান) ভাষায় পিতা হচ্ছেন ‘পাপা’ তেমনি ক্রোয়েশিয়ান এ ‘ওটেক’ ভাগ্যিশ! ক্রোয়েশিয়ায় জন্মাই নি! কারণ ওরা পিতাকে ‘ওটেক’ ওটেক বলে! দাঁড়ান আরো আছে, ব্রাজিলিয়ান পর্তুগিজ ভাষায় পিতা ডাক হচ্ছে ‘পাই’। ডাচ ভাষায় পাপা, ভাডের আর পাপাই এই তিনটি হচ্ছে পিতা ডাক। সবচাইতে বেশী প্রতিশব্দ বোধহয় ইংরেজি ভাষাতেই! ইংরেজরা পিতাকে ডাকেন, ফাদার, ড্যাড, ড্যাডি, পপ, পপা বা পাপা! ফিলিপিনো ভাষাও কম যায় না, এই ভাষায় পিতা হচ্ছেন তাতেই, ইতেই, তেয় আর আমা।

আমরা কিন্তু পিতাকে আদর করে হিব্রু ভাষাতেও ডাকি! হিব্রু ভাষায় পিতা হচ্ছে ’আব্বাহ্‌’। হিন্দি ভাষার পিতা ডাকটি পিতাজী! আবার ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় অর্থাৎ সেই ‘বাহাসা ইন্দোনেশিয়া’য় যদি পিতা ডাকি তাহলে সেটা হবে- বাপা কিংবা আইয়্যাহ! জাপানিরা তাদের ভাষায় পিতাকে ডাকেন- ওতোসান, পাপা। পুর্ব আফ্রিকায় অবশ্য পিতাকে ‘বাবা’ ডাকা হয়! হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় পাপা ছাড়াও পিতা শব্দের অনেকগুলো প্রতিশব্দ আছে, যেমন- আপা, আপু, এদেসাপা। বাংলা ভাষায় বাবা বা আব্বা।

বাবা দিবসের প্রয়োজনীয়তা
আপাত দৃষ্টিতে অনেকের কাছেই মা দিবস বা পিতৃ দিবস পালনের বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পায় না। তাই বলে এ ধরনের দিবসগুলো একেবারেই যে অপ্রয়োজনীয়, তেমনটা কিন্তু মোটেও বলা যাবে না। সন্তানের জন্য পিতার ভালোবাসা অসীম। মুঘল সাম্রাজ্যরের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর সন্তানের প্রতি পিতার ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন। তিনি সন্তান হুমায়ুনের জীবনের বিনিময়ে নিজের জীবন ত্যাগ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। এমন স্বার্থহীন যার ভালোবাসা, সেই পিতাকে সন্তানের খুশির জন্য জীবনের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়। বাবা দিবসে সন্তানদের সামনে সুযোগ আসে পিতাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানানোর।

তাছাড়া বাবা দিবস পালনের ফলে সমাজে এবং পরিবারে পিতাদের যে অবদান তা যে সমাজ এবং নিজের সন্তানরা মূল্যায়ন করছে, এ বিষয়টিও পিতাদের বেশ আনন্দ দেয়। তাছাড়া অনেক সন্তানই আছে, যারা পিতা-মাতার দেখাশোনার প্রতি খুব একটা মনোযোগী নয়। মা দিবস বা পিতৃ দিবস তাদের চোখের সামনের পর্দাটি খুলে ফেলে পিতা-মাতার প্রতি তার দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে তাই বলা যায়, পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে মা দিবস বা পিতৃ দিবসের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। মোটকথা আমাদের পরিবার তথা সমাজে পিতার যে গুরুত্ব তা আলাদাভাবে তুলে ধরাই পিতৃ দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত