১০ হাজার টাকায় শিশু ধর্ষণ মিটমাট!

প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:৫৪

নুর উদ্দিন

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে প্রথম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে (৭) ধর্ষণের ঘটনা গ্রাম্য মাতব্বররা শালিসের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকায় মিটমাট করেছেন। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের পিরিজপুর গ্রামে শিশু ধর্ষণের বিষয়টি জানাজানির পর তোলাপাড় শুরু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২১ এপ্রিল বিকালে পিরিজপুর গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের ৭ বছরের শিশুকে একই গ্রামের প্রভাবশালী প্রতিবেশী উপানন্দ দাসের ছেলে নয়ন দাস (২১) মোবাইল ফোনে গান শোনানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটি বাড়ি এসে পরিবার ও প্রতিবেশীদের কাছে ঘটনা খুলে বলে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে নয়নের পরিবার ও স্বজনরা গ্রামের মাতব্বরদের দিয়ে রাতেই ওই শিশুর চিকিৎসাসেবা গ্রহণ ও আইনি সহায়তা নিতে বাধা সৃষ্টি করে। চিকিৎসার জন্য গ্রামের হোমিও প্যাথিক এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। গ্রামের চিকিৎসক অপারগতা প্রকাশ করলে সেখান থেকে রাতেই সুনামগঞ্জ শহরে একটি প্রাইভেট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে শিশুটিকে গোপনে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি নিয়ে আসা হয়।

অপরদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য পাখি বাবু, বোরহান উদ্দিন, নিরু দাস, নানির উদ্দিন, আজির উদ্দিন গত ২৫ এপ্রিল গ্রাম্য মাতব্বর মন্টু ভট্রাচার্য্যের সভাপতিত্বে শালিসে বসেন। সালিশে ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল হেকিম, ভিকটিম, ভিকটিমের পরিবাররসহ গ্রামের শতাধিক লোকজনের উপস্থিত থাকলেও অভিযুক্ত নয়ন দাসকে উপস্থিত করা হয়নি। ওই শালিসে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় নয়নকে দোষী সাব্যস্ত করে ভিকটিমের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা ‘ক্ষতিপূরণ’ দেওয়ার রায় দেন।

ভিকটিমের পিতা-মাতা জানান, শিশু কন্যার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ও থানায় আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নিলেও গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন গ্রাম্য মাতব্বর বাঁধা প্রদান করেন। 

ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান রনজিত চৌধুরী রাজন জানিয়েছেন, ধর্ষণের মতো ঘটনা আইন-আদালত ব্যতিত গ্রাম্য শালিসে বিচারের এখতিয়ার নেই।

বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি (তদন্ত) নব গোপাল দাস বলেন, শুরুতে এ বিষয়টি থানা পুলিশকে কেউ অবহিত করেনি। রবিবার সকালে লোকমুখে শিশু ধর্ষণের ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে ভিকটিমকে আইনি সহায়তা প্রদান করা হবে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত