খুলনার মেয়র খালেক

প্রকাশ : ১৬ মে ২০১৮, ১০:৫২

সাহস ডেস্ক

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদে বেসরকারিভাবে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক নির্বাচিত হয়েছেন। স্থগিত তিন কেন্দ্রের ভোট ছাড়াই তিনি বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর চেয়ে প্রায় ৭০ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৫ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শহরের সোনাডাঙ্গা বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রভিত্তিক বেসরকারি এই ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলী।

জেলা রিটার্নিং অফিসার কার্যালয় থেকে ঘোষিত ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৮৬টির ফলাফলে খালেকের প্রাপ্ত ভোট ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫১। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু পেয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট। জাতীয় পার্টির মেয়রপ্রার্থী এস. এম. শফিকুর রহমান পেয়েছেন ১ হাজার ৭২ ভোট।

ইউনুচ আলী জানান, তালুকদার আবদুল খালেক নৌকা প্রতীকে লড়ে পেয়েছেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট।

বিজয়ী হওয়ার পর তালুকদার আবদুল খালেক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমাকে নির্বাচিত করায় খুলনাবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। এটি উন্নয়নের বিজয় হয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমি খুলনার উন্নয়ন করে যেতে চাই। একইসঙ্গে তিনি সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে মেয়র পদে নির্বাচন করতে আদেশ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

এসময় তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন। পরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গেলে সেখানেও তাকে আনন্দে উৎফুল্ল নেতাকর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এদিকে, বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, জালিয়াতি, কারচুপি, ভোট ডাকাতির ফলাফল খুলনাবাসী মেনে নেবে না। নির্বাচন নিয়ে খেলা করার দরকার ছিল না। এ নির্বাচন না হলে তো সমস্যা ছিল না। এ ধরনের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না। তারা চর দখলের মতো ভোট কেন্দ্রও দখল করে নেয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়ে বিএনপিকে খুলনার ভোট থেকে ‘শিক্ষা’ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

কাদের বলেছেন, বিএনপির জন্য সামনে আরও বড় বড় হার অপেক্ষা করছে। খুলনা থেকে তাদের শিক্ষা নিতে হবে।

নির্বাচন কমিশন বলছে, দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশে। চমৎকার, সুন্দর এবং উৎসবমুখর পরিবেশে খুলনায় নির্বাচন হয়েছে।

বিএনপির অভিযোগ ‘সুনির্দিষ্ট নয়’ উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেছেন, “দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠুভাবেই ভোট হয়েছে। কয়েকটি কেন্দ্র বন্ধ হয়েছে, সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আ’লীগের তালুকদার আবদুল খালেক, বিএনপি মনোনীত নজরুল ইসলাম মঞ্জু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত শফিকুর রহমান মুশফিক (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক (হাত পাখা) ও সিপিবি মনোনীত মো. মিজানুর রহমান বাবু (কাস্তে)।

খুলনা সিটি করপোরেশনের ভোটাররা প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ভোট দিয়েছেন। ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের ১৫৬১টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হয়েছে। এবারের খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ জন এবং নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন।
সাহস২৪.কম/রনি/মশিউর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত