পাটের তৈরি ‘সোনালী ব্যাগ’ ব্যবহারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০১৮, ১৬:০২

সাহস ডেস্ক

পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে বিকল্প হিসেবে পাটের তৈরি ‘সোনালী ব্যাগ’ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আপনারা শুনে খুশি হবে যে, এখন পাটের পলিমার থেকে যেটা পচনশীল সেই ধরনের ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। আমরা এটার নাম দিয়েছি ‘সোনালী ব্যাগ’। এই সোনালী ব্যাগ পরিবেশ দূষণ করবে না।

বুধবার (১৮ জুলাই) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০১৮’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৮ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহিদের স্মরণে সারাদেশে একযোগে ৩০ লক্ষ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

প্ল্যাস্টিককে বিশ্বব্যাপী সমস্যা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, পাটকে তার সোনালী দিনে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ যেমন নিয়েছি, সেই সাথে সাথে এই আবিস্কারটাও করা হয়েছে এবং পাটের ওপর গবেষণা চলছে। কাজেই আমি মনে করি এই সোনালী ব্যাগটা পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। তাছাড়া পাটের ছোট ছোট থলে, ব্যাগ এগুলোও ব্যবহার করা যায়। এমনকি ফ্যাশনের জন্যও ব্যবহার করা যায়। আমি যে ব্যাগটা (হ্যান্ডব্যাগ) ব্যবহার করছি সেটা কিন্তু পাটের তৈরি ব্যাগ।

এপ্রিলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন জানায়, এখন প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার পাটজাত পলিথিন ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। এগুলো ১৫ কেজি ধারণ ক্ষমতার। কাঁচামাল, যন্ত্রপাতির অবচয়মূল্য, বিদ্যুৎ, কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা মিলিয়ে প্রতিটি ব্যাগের উৎপাদন খরচ পড়ছে ১২ টাকা ৯৩ পয়সা। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই ব্যাগ উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন প্রায় পাঁচ লাখ করে ব্যাগ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদনে যাওয়ার পর ব্যাগের উৎপাদন খরচ কমে আসবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যাগ উৎপাদনেন খরচ ৭-৮ টাকায় নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পাট থেকে নানা ধরনের পণ্য তৈরির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের জন্য বিরাট সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বিশ্বব্যাপী যখন পরিবেশের কথা আসছে, আমরা পাট উৎপাদনকারী একটি দেশ। এই পাট পণ্য উৎপাদন করে এর বহুমুখী ব্যবহার আমরা নিশ্চিত করতে পারি, বিদেশে রপ্তানিও করতে পারি। আমরা চাই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তারাও উদ্যোগটা নেবেন। ধীরে ধীরে প্লাস্টিকটাকে আস্তে আস্তে সরিয়ে দিয়ে… হয় এটাকে (প্লাস্টিক) পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে না হয় আস্তে আস্তে এটাকে সরিয়ে দিতে হবে।

শেখ হাসিনা দেশের সব মানুষকে বৃক্ষরোপন অভিযানে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচানোর জন্য বৃক্ষরোপন একান্তভাবে প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কাজেই এজন্য আমি সবাইকে আহ্বান জানাই যে, প্রত্যেকে একটা বনজ, একটা ফলজ ও একটা ঔষধি গাছ লাগান।

অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন ২০১৮, বৃক্ষরোপনে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কার ২০১৮ এবং জাতীয় পরিবেশ পদক ২০১৮’ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একটি ছাতিম গাছের চারা রোপন করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাছান মাহমুদ বক্তব্য দেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত