‘রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ মেয়াদে থাকার কোনো সুযোগ নেই’

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:১৩

সাহস ডেস্ক

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে দীর্ঘ মেয়াদে থাকার কোনো সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাধ্য হবে। আজ বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম মিলনের এ-সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চাই। আওয়ামী লীগ সরকারের গ্রহণ করা কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে রোহিঙ্গাদের নিজদের ভূমিতে নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।’

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কারণে কক্সবাজারসহ আশপাশের জনগোষ্ঠী ও প্রতিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বনভূমি উজাড় ও পাহাড় কাটার কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। ডিপথেরিয়া, পোলিও, এইচআইভিসহ নানা সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে মানব পাচার, মাদকদ্রব্য চোরাচালানসহ সংঘবদ্ধ অন্যান্য অপরাধের ঝুঁকি বেড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের স্থায়ী ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি চুক্তি সই হয়েছে। পাশাপাশি মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’

আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে এ সমস্যার অগ্রগতি পর্যালোচনাসহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমরা বিভিন্ন সভায় তুলে ধরব। এ ছাড়া অধিবেশনের সাইডলাইনে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।’

নুরুল ইসলামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার শুরু হয় ১৯৭৮-৭৯ সালে। তখন এ দেশে ছিল সামরিক শাসক। তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছিল, তা আমার জানা নেই। তবে তাদের ব্যর্থতার কারণে এই সমস্যা এখনো অব্যাহত আছে। ১৯৯১-৯২ সালে বিএনপির সময়ও রোহিঙ্গা আসে। এবার প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে রোহিঙ্গাদের আলাদা রঙের আইডি দেওয়া হয়েছে। আমাদের সাফল্য, আন্তর্জাতিক জনমত সৃষ্টি করতে পেরেছি। আন্তর্জাতিক মহল মনে করে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে, নির্যাতনের বিচার করতে হবে। চীন ও ভারত মিয়ানমারের কিছু জায়গায় রোহিঙ্গাদের জন্য ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে। মিয়ানমার স্বীকার করেছে, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। কিন্তু নিচ্ছে না। তবে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তারা ফেরত নিতে বাধ্য হবে।’

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নোত্তরের আগে বিকেল পাঁচটার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত