বাঙালি খান থেকে মীর কাসেম আলী
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০১৬, ১০:৫৬
মানবতাবিরোধী ও আটককৃত মীর কাসেম আলী একাত্তরে ‘বাঙালি খান’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সেই বাঙালি খান পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর সবচেয়ে বড় অর্থ যোগানদাতা হয়ে ওঠেন।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধী মীর কাসেমের ফাঁসির দণ্ডাদেশ পুনর্বিবেচনা আবেদন খারিজ করেন আপিল বিভাগ। এর আগে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে নয়াদিগন্ত কার্যালয় থেকে তাকে আটক করা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ মীর কাসেমকে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তানের খান সেনাদের সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হওয়া ‘বাঙালি খান’ হিসেবে। মীর কাসেম জামায়াতের তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এখনকার এই বিত্তশালী জামায়াত নেতা একাত্তরে ছিলেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের আল বদর বাহিনীর কমান্ডার। তার নির্দেশেই চট্টগ্রাম টেলিগ্রাফ অফিস সংলগ্ন এলাকায় হিন্দু মালিকানাধীন ‘মহামায়া ভবন’ দখল করে নাম দেওয়া হয় ‘ডালিম হোটেল’। সেখানে গড়ে তোলা হয় বদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন্দি শিবির। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর্যবেক্ষণে সেই ডালিম হোটেলকে বলা হয় ‘ডেথ ফ্যাক্টরি’।
ডালিম হোটেল ছাড়াও নগরীর চাক্তাই চামড়ার গুদামের দোস্ত মোহাম্মদ বিল্ডিং, দেওয়ানহাটের দেওয়ান হোটেল ও পাঁচলাইশ এলাকার সালমা মঞ্জিলে বদর বাহিনীর আলাদা ক্যাম্প ও নির্যাতন কেন্দ্র ছিল সে সময়। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম সেসময় দুর্ধর্ষ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল স্বাধীনতাকামী সাধারণ মানুষের কাছে। ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে এসেছে সেসব নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের কথা।
এই বাঙালি খানই রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ১৯৭৫ সালের পর পট পরিবর্তনের পর নিজের প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার সুযোগ পেতে থাকে। যুদ্ধাপরাধীর লেবাস ছেড়ে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর কাসেম ১৯৮৫ সাল থেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অর্থাৎ মজলিসে শূরার সদস্য হিসেবে দলেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। তিনি হলেন জামায়াতের পঞ্চম শীর্ষ নেতা আপিলের রায়েও যার সর্বোচ্চ সাজার সিদ্ধান্ত এসেছে।