আগরতলায় শেখ মুজিবুর রহমানের নামে জাদুঘর স্থাপনের দাবি

প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০১৮, ১২:৩৬

সাহস ডেস্ক

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে জাদুঘর স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন সেখানকার বুদ্ধিজীবী-রাজনীতিকরা। এ দাবিতে রাজ্যের ৭২ বুদ্ধিজীবী-রাজনীতিক একসঙ্গে একটি লিখিত আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথের কাছে।

আবেদনে বলা হয়, পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার ঘিরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তাই এখানে বাংলাদেশের জাতির পিতার নামে একটি ভবন নির্মাণ এবং জাদুঘর তৈরি করতে হবে। যেখানে থাকবে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত নানা স্মারক ও দলিল।

আবেদনে স্বাক্ষরকারীদের অন্যতম বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত শ্যামল চৌধুরী (৮২)। এছাড়াও আবেদনে আরও স্বাক্ষর করেছেন ত্রিপুরার সাবেক মন্ত্রী ড. ব্রজগোপাল রায়, আগরতলা পুরনিগমের কাউন্সিলার ফুলন ভট্টাচার্য্য, বর্ষিয়ান সাংবাদিক সুবল দে, ত্রিপুরা বিধানসভার সাবেক সদস্য গোপাল রায়, ত্রিপুরা বিধানসভার বর্তমান সদস্য আশিষ কুমার সাহা, সুশান্ত চৌধুরী প্রমুখ।

শ্যামল চৌধুরী জানান, মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর আবেদন গেছে। খুব দ্রুত দাবিটি পর্যটনমন্ত্রীর কাছে যাবে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে শ্যামল চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা ত্রিপুরায় বসে করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযুদ্ধের জন্য সহায়তা চাইতে ১৯৬৩ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু ত্রিপুরা রাজ্যে এসেছিলেন। ত্রিপুরার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত শচীন্দ্র লাল সিংয়ের নির্দেশে সদর মহকুমার সাবেক শাসক কৈলাস প্রসাদ চক্রবর্তী সীমান্তের পার্শ্ববর্তী জিরানিয়া থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আসেন আগরতলায়। এরপর অতিযত্ন সহকারে বঙ্গবন্ধুকে রাখতে দায়িত্ব দেন তৎকালীন আগরতলার কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপারিনটেন্ডেন্ট ননী কর ভৌমিককে।

বিশিষ্ট লেখক প্রয়াত হরিভূষণ পাল তার ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ফিরে দেখা’ শীর্ষক বইটিতে উল্লেখ করেছেন, বঙ্গবন্ধু গোপনে ত্রিপুরায় এসে সেসময়কার মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্র লাল সিংয়ের কাছে পূর্ব-পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের জন্য সহায়তা চান। তখন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আরও কয়েকজন এসেছিলেন। তাদের আগরতলায় দু’টি বাড়িতে রাখা হয়। মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্র লাল সিং দিল্লি গিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহেরুর সঙ্গে দেখা করে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তাবের কথা জানান। কিন্তু আন্তর্জাতিক কূটনীতির কারণে প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহেরু প্রস্তাবে রাজি হননি। তাই বঙ্গবন্ধু ও তার সঙ্গীদের ‘বিদেশি অনুপ্রবেশ’ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

ওই সময় আইন প্রয়োগের স্বার্থে নামমাত্র তাদের জেলে পাঠানো হলেও বঙ্গবন্ধু ও তার সঙ্গীরা থাকেন জেল সুপারের বাংলোয়। পাশাপাশি তার যেন কোনো ধরনের অসুবিধা না হয় তা নিজে তদারকি করতেন তৎকালীন রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি উমেশ কান্ত সিনহা। বঙ্গবন্ধু তিন দিন আগরতলায় ছিলেন।

শ্যামল চৌধুরী বলেন, এমন সব কারণে আগরতলার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের গুরুত্ব আলাদা। তাই এখানে বঙ্গবন্ধুর মতো একজন মহান ব্যক্তিত্বের নামে জাদুঘর তৈরির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত