আবুল ফজল (সাহিত্যিক)

প্রকাশ : ০৪ মে ২০১৭, ১২:০০

সাহস ডেস্ক

আবুল ফজল বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং রাষ্ট্রপতির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি মূলত একজন চিন্তাশীল ও সমাজমনস্ক প্রবন্ধকার। তাঁর প্রবন্ধে সমাজ, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাষ্ট্র সম্পর্কে গভীর ও স্বচ্ছ দৃষ্টিসম্পন্ন মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন
আবুল ফজল ১৯০৩ সালের ১ জুলাই চট্টগ্রামের কেঁওচিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মৌলবি ফজলর রহমান এবং মা গুলশান আরার একমাত্র পুত্রসন্তান। প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু হয় গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে। এখানে অল্প কিছুদিন পড়ার পর বাবার সাথে চট্টগ্রাম শহরে চলে আসেন। পরবর্তীতে নন্দন কাননে এক হাইস্কুল সংলগ্ন প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হন। মাদ্রাসা সেশন শুরু হতে দেরি ছিল বলে সাময়িকভাবে তাঁকে ঐ স্কুলে ভর্তি করা হয়।

পরে ১৯১৩/১৪ সালে চট্টগ্রাম সরকারি মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯২৩ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯২৫ সালে ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৮ সালে বি.এ. পাস করেন। এছাড়া ১৯৪০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. পাশ করেন।

কর্মজীবন
বাবা (মৌলবি ফজলর রহমান) এবং পিতামহ (মৌলবি হায়দর আলী)র পদাংক অনুসরণ করে আবুল ফজল আলেম হোক এমনটিই চেয়েছিলেন বাবা মৌলবি ফজলর রহমান। কিন্তু আবুল ফজলকে সাহিত্যই বেশি আকর্ষন করেছিল। পরবর্তীতে শিক্ষক হওয়ার সংকল্প করেন আবুল ফজল। আর এ জন্য ১৯২৯ সালে বি.টি. পড়ার জন্য ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভর্তি হন। বি. টি. পাস করার পর ১৯৩১ সালে চট্টগ্রাম ফিরে আসেন। চট্টগ্রাম আসার পর সেখানকার কলেজিয়েট স্কুলে দ্বিতীয় মৌলবী হিসেবে কিছুদিন চাকরি করেন। এরপর তিনি চাট্টগ্রাম সরকারী মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে দুই মাস চাকরি করেন।

এরপর চাট্টগ্রাম কাজেম আলী বেসরকারী হাইস্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন। ১৯৩৩ সালে তিনি খুলনা জেলা স্কুলে দ্বিতীয় পন্ডিতের পদে স্থায়ীভাবে যোগ দেন। ১৯৩৭ সালে খুলনা ছেড়ে এসে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে সহকারী ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৪১ সালে কৃষ্ণনগর কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪৩ সালে যোগ দেন চট্টগ্রাম কলেজে। এই কলেজের কলেজ গভর্নিং বডির নির্বাচনে তিনি দাঁড়ান এবং জয়ী হন। ১৯৫৯ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে এবং বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

প্রকাশিত গ্রন্থ
জীবনপথের যাত্রী, রাঙ্গা প্রভাত(১৩৬৪), চৌচির(১৯৩৪), মাটির পৃথিবী(১৩৪৭), আয়েশা, আবুল ফজলের শ্রেষ্ঠ গল্প, সাহিত্য সংস্কৃতি ও জীবন, সমাজ সাহিত্য রাষ্ট্র শুভবুদ্ধি(১৯৭৪), সমকালীন চিন্তা, রেখাচিত্র, সফরনামা, দুর্দিনের দিনলিপি

পুরস্কার ও সম্মাননা
স্বাধীনতা পদক, ২০১২, বাংলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৬২, প্রেসিডেন্ট সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৬৩, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৬০, নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক, ১৯৮০, মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮১, আব্দুল হাই সাহিত্য পদক, ১৯৮২, রাষ্ট্রীয় সাহিত্য পুরস্কার, সমকাল পুরস্কার।

মৃত্যু
আবুল ফজল ১৯৮৩ সালের ৪ মে মৃত্যুবরণ করেন।

সূত্র: উইকিপিডিয়া 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত