শুভ জন্মদিন প্রিয় মার্ক জাকারবার্গ

প্রকাশ : ১৪ মে ২০১৮, ১২:৫৪

ইন্টারনেটের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মেধাবী এই তরুণের পুরো নাম মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গ, জন্মেছিলেন ১৯৮৪ সালের ১৪ মে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বর্তমান বিশ্বে বহুলভাবে পরিচিতদের মাঝে তাঁর নামটি অন্যতম।

মার্ক জাকারবার্গের জন্ম ও শৈশব আমেরিকার শহর নিউ ইয়র্কে। চার ভাই-বোনের মাঝে তিনি সবার বড়। তাঁর বাবা এডওয়ার্ড জুকারবার্গ একজন ডেন্টিস্ট এবং মা কারেন একজন সাইকোলজিস্ট। তিনি মাধ্যমিক শ্রেণিতে অধ্যয়ণের সময় থেকে শখের বশে সফটওয়্যার লেখা শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০০ পর্যন্ত আরদস্লেয় উচ্চমাধমিক বিদ্যালয়ে এবং ২০০০ সালে তিনি পিল্লিপ্স এক্সেটার একাডেমিতে পড়াশুনা করেন। ২০০২ সালে পিল্লিপ্স এক্সেটার একাডেমি থেকে পাস করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন। ২০০৪ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হল থেকে ফেইসবুকের সূচনা করেন জাকারবার্গ।

হার্ভার্ড এ তাঁর ২য় বর্ষ চলাকালীন সময়ে মার্ক জাকারবার্গ ২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর তৈরি করেন ফেসবুকের পূর্বসূরি সাইট ফেসম্যাস। এতে তিনি হার্ভার্ডের ৯ টি হাউসের শিক্ষার্থীদের ছবি ব্যাবহার করেন। তিনি দুইটি করে ছবি পাশাপাশি দেখান এবং হার্ভার্ডের সব শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে আহ্বান জানান। কোন ছবিটি হট আর কোনটি হট নয়। ‘হট অর নট’। এজন্য মার্ক জাকারবার্গ হার্ভার্ডের সংরক্ষিত তথ্য কেন্দ্রে অনুপ্রবেশ বা হ্যাক করেন। ফেসম্যাস সাইটে মাত্র ৪ ঘণ্টায় ৪৫০ ভিজিটর ২২০০০ ছবিতে অন লাইন এর মাধ্যমে ভোট দেন। ২০০৪ -২০০৫ সাল পর্যন্ত ফেসবুক শুধুমাত্র আমেরিকাবাসী ব্যবহার করত পারত। ২০০৫ সাল থেকে ফেসবুক সারাবিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, ফলশ্রুতিতে বর্তমানে ৯ মিলিয়ন এর বেশি ব্যবহারকারী।

২০০৪ সালের ফেসম্যাস হতে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০০৪ এর জানুয়ারিতে মার্ক তার নতুন সাইট এর কোড লেখা শুরু করেন এবং ফেব্রুয়ারিতে হার্ভার্ডের ডরমিটরিতে দিফেসবুক.কম এর উদ্বোধন করেন। শিঘ্রই মার্ক জাকারবার্গ এর সাথে যোগ দেন ডাস্টিন মস্কোভিৎজ (প্রোগ্রামার), ক্রিস হুগেস ও এডোয়ার্ডো স্যাভেরিন (ব্যবসায়িক মুখপাত্র) এবং অ্যান্ড্রু ম্যাককলাম (গ্রাফিক আর্টিস্ট)। জুনে প্যালো আল্টোতে অফিস নেওয়া হয়। ডিসেম্বরে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছায়। এরপর ২০০৫ সালের আগস্টে ‘দ্য ফেসবুক ডটকম’ নামটি পাল্টে কোম্পানির নাম রাখা হয় শুধু ‘ফেসবুক’। সেই বছরের ডিসেম্বরে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৫ লাখ।

২০০৬ সালের আগস্টে কৌশলগত কারণে ফেসবুকের সঙ্গে মাইক্রোসফট সম্পর্ক স্থাপন করে। সেপ্টেম্বর থেকে সর্বসাধারণের জন্য ফেসবুক উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আগে শুধু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই ছিলেন এর ব্যবহারকারী। সে বছর ডিসেম্বরে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় এক কোটি ২০ লাখে। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভার্চুয়াল গিফট শপ চালু হয়। এপ্রিলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা পৌঁছায় দুই কোটি।

২০০৮ সালে কানাডা ও ব্রিটেনের পর ফেব্রুয়ারিতে ফ্রান্স ও স্পেনে ফেসবুকের ব্যবহার শুরু হয়। এপ্রিলে ফেসবুক চ্যাট চালু হয়। আগস্টে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ কোটিতে। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ব্যবহারকারী ১৫ কোটি। ডিসেম্বরে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩৫ কোটিতে। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে সংখ্যা ছিল ৪০ কোটি, জুলাইয়ে সেই সংখ্যা ৫০ কোটি ছাড়িয়ে যায়। আর ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ৫৫ কোটি। ফেসবুক কোম্পানী অবশ্যই একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তা অর্থবিত্ত করার জন্য নয়, বরং ভালো মানের সেবা প্রদানের মাধ্যমে অর্থবিত্ত করাই তাঁর লক্ষ্য। তিনি বলেন- "We've always cared primarily about our social mission, the services we're building and the people who use them."

অর্থাৎ, সামাজিক লক্ষ্য বা মিশনকে প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে ধরেই সেবার উদ্যোগ নেয়া হয়। ফেসবুক যে লুটপাটের মাধ্যম নয়, তা বোঝা যায় জাকারবার্গের সাদামাটা জীবন দেখলে। তিনি খুবই সাদামাটাভাবে তাঁর জীবন সঙ্গিনী ও একমাত্র শিশু সন্তানকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় ফেসবুক অফিস থেকে হাঁটা পথের দূরত্বে বসবাস করেন। ১৯ মে ২০১২ সালে মার্ক জাকারবার্গ প্রিসিলা চ্যানকে বিয়ে করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত