নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৭, ১২:৫৩

অনলাইন ডেস্ক

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ সত্তর দশকের শেষভাগ থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের পথিকৃৎ এবং নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে সমাদৃত এই ব্যক্তিত্বের ৬৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। জন্মদিন উপলক্ষে ১৩ নভেম্বর (সোমবার) নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

গতকাল রাত ১২টায় কেক কেটে তার জন্মদিন উদযাপন করেছেন স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। সোমবার ভোরে হুমায়ুন আহমেদের নিজ হাতে গড়া নুহাশ পল্লীতে যাত্রা এবং এতিমখানায় খাবার পরিবেশন করা হবে পারিবারিকভাবে। এ ছাড়া চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী আয়োজন করা হয়েছে ‘হুমায়ূন মেলা’। বিকাল তিনটায় পাবলিক লাইব্রেরিতে বসবে হুমায়ূন আহমেদের একক বইমেলা ও নাটকের মঞ্চায়ন। অন্যদিকে সোমবার বাংলা একাডেমিতে প্রদান করা হয় ‘এক্সিম ব্যাংক- অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার-২০১৬’।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকেনা জেলার মহুকুমার কেন্দুয়ার কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফয়েজুর রহমান। একাত্তরে পাকাবাহিনী তাকে হত্যা করে। মা আয়েশা ফয়েজ। 

হুমায়ূন আহমেদ বিংশ শতাব্দীর বাঙালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। বলা হয়, আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি সমাদৃত। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপ প্রধান নতুন শৈলীর জনক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত। তার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো পেয়েছে অসামান্য দর্শকপ্রিয়তা। তার টেলিভিশন নাটকগুলো ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। সংখ্যায় বেশি না হলেও তার রচিত গানও সবিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বার্থে একপর্যায়ে অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।

তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য বইগুলো হচ্ছে- হোটেল গ্রেভারইন, দেবী, অনন্ত অম্বরে, কোথাও কেউ নেই, জ্যোস্না ও জননীর গল্প, আগুনের পরশমনি, মধ্যাহ্ন, কিশোর সমগ্র, আয়না ঘর, একজন মায়াবতী, কে কথা কয়, অপেক্ষা, আমার আছে জল, লীলাবতী, হরতন ইস্কাপন, হলুদ হিমু কালো র‌্যাবসহ হিমুকে নিয়ে লেখা সিরিজ, মিসির আলী সিরিজ, শুভ্র সিরিজ। হাতেগল্প পঞ্চাশ, আমিউ মিছির আলী, হিমু রিমান্ডে, মিছির আলীর চশমা, দিঘির জলে কার ছায়া গো, লিলুয়া বাতাস, হুমায়ুন আহমেদের ভৌতিক অমনানিবাস, কূহক, পাপ ৭১, শ্রাবন মেঘের দিন। তার নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে শঙ্খনীল কারাগার, শ্রাবন মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, নয় নম্বর বিপদ সংকেত, শ্যামল ছায়া। সাহিত্যে অবদানের জন্য হুমায়ূন আহমেদ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন।

২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হুমায়ূন আহমেদের অন্ত্রে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসাধীন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই সবাইকে কাঁদিয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ২৪ জুলাই নুহাশ পল্লীর লিচুতলায় তাকে দাফন করা হয়।

সাহস২৪.কম/জুয়েনা/ আল মনসুর