বাজারে চালের দাম কম তবে ফেরেনি স্বস্তি

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০১৬, ১৮:৪৯

সাহস ডেস্ক

বাজারে প্রায় তিন মাস ধরে বাড়তে থাকা চালের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে যে হারে দাম বেড়েছিল, সে হারে না কমায় ভোক্তাদের মাঝে স্বস্তি ফেরেনি।

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকার কয়েকটি পাইকারি বাজারে দরদাম অনুসারে গুটি, স্বর্ণা, মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের দাম কেজিতে এক টাকা আবার কোথাও দেড়/দুই টাকা করে কমেছে। ৫০ কেজির বস্তায় কমেছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।

উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে রোজার ঈদের পর থেকেই চালের দাম বাড়তে শুরু করে। ২২ টাকা কেজি দরের মোটা চালের দাম বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় পৌঁছে ছিল।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনসুর হোসেন মনে করেন, সরকারের সংগ্রহ নীতির দুর্বলতার কারণেই মোটা চালের দাম বেড়ে ছিলো। 
সাগর অটো রাইস মিলের এই মালিক বলেন, এ বছর সরকার যে সময়ে মোটা চাল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছিল, তখন বাজারে মোটা ধান বা চালের মওসুম ছিল না। এছাড়া কৃষকরাও গত কয়েক বছর ক্ষতির শিকার হয়ে মোটা ধান (স্বর্ণা) চাষ কমিয়ে দিয়েছেন।

লাভজনক হওয়ায় সবাই চিকন চালের ধান চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এসব কারণে মোটা চালের সঙ্কট দেখা দেওয়ায় ‘অটোমেটিক’ চালের দাম বেড়ে যায়।

এই মিল মালিক বলেন, সরকারে সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তারা চাহিদা অনুযায়ী চাল সরবরাহ করতে বাধ্য। এ বছর তিনি ৫০ কেজির সাড়ে ছয় হাজার বস্তা চাল সরকারকে দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় বাজারে ধান না পেয়ে তাকে সুদূর হবিগঞ্জ জেলায় গিয়ে ধান আনতে হয়েছিল।

চলতি মৌসুমে ধান সংগ্রহ অভিযান শেষ হওয়ার পর গত ২৫ জুলাই সারাদেশের মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে খাদ্য অধিদপ্তর।
সরকারের চাহিদা পূরণে প্রতিটি মিল মালিক এক সঙ্গে মাঠে নামার পর ধানের দাম বেড়ে গেল। পরিস্থিতি এমন হয় যে, চালের দাম বাড়ার পরেও ২/৩শ টাকা লস দিয়ে সরকারকে চাল দিতে হয়েছিল। আর এর প্রভাব পড়ে সার্বিক চালের বাজারে, বলেন মনসুর।

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সারাদেশে চালের মিলগুলো প্রায় ১৫ দিন করে বন্ধ  থাকার কারণেও চালের সঙ্কট দেখা দিয়েছিল বলে মনে করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের এই ব্যবসায়ী। চালের দাম বৃদ্ধিতে এর প্রভাব রয়েছে বলে জানান তিনি। 

দাম কমার বিষয়ে তিনি বলেন, চিকন জাতের চালের দাম আরও কমতে পারে। তবে নভেম্বরে আমন ধান বাজারে আসার আগ পর্যন্ত মোটা জাতের ধান কিংবা চালের দাম খুব একটা কমবে না।

ঢাকার বাড্ডার কামরুল রাইস এজেন্সির বিক্রয়কর্মী রোমান জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে এক দুই টাকা কমেছে। সে হিসেব মতে মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা ২২৫০ টাকা থেকে কমে ২২ টাকায় এসেছে। বিআর আটাশ চাল কেজিতে ২ টাকা কমেছে। ১৯৫০ টাকার বস্তা (৫০ কেজি) এখন ১৮৫০ টাকা। স্বর্ণা চালও কেজিতে দেড় টাকা কমেছে, এই চালের বস্তা (৫০ কেজি) এখন ১৮৫০ টাকা। নাজিরশাইল ২০৫০ টাকা ২৪০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত