কক্সবাজারে লবণ উৎপাদন শুরু

প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০১৬, ১৭:১০

কক্সবাজার জেলায় পুরুদমে লবন উৎপাদন শুরু হয়েছে। পরিবেশ অনুকুলে থাকায় মৌসুমের আগেই থেকে লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে পেকুয়া, মহেশখালী ও টেকনাফে ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ সংস্কার না করায় এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কারণে লবণ চাষের জমি কমে যেথে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখনো পর্যন্ত কতৃপক্ষ লবণ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করতে পারেনি।

জানাযায়, চলতি লবণ উৎপাদন মৌসুমে (নভেম্বর-মে) কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, কক্সবাজার সদর, টেকনাফ এলাকয় লবন উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে। সাধারণতঃ আবহাওয়া লবণ চাষের অনুকূলে থাকলে ও উৎপাদন মৌসুমে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা গেলে চাষিরা দিনরাত খেটে লক্ষ্যমাত্রার অধিক লবণ উৎপাদন করতে পারবে। ইতোমধ্যে কুতুবদিয়াসহ কয়েকটি এলাকায় লবণ উৎপাদন শুরু ও বিক্রিও হয়েছে। 

চলতি উৎপাদন মৌসুমে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ভারত, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে লবণ আমদানীর পায়তারা নিয়ে তাদের মনে শংকা কাজ করছে। প্রতিবছরই এক শ্রেণীর লবণ মিল মালিক সরকারকে ভুল বুঝিয়ে এ কাজটি করে থাকে। ফলে প্রায় প্রতিবছর উৎপাদনের মাঝপথে লবণ উৎপাদনে চাষিদের উৎসাহে ভাটা পড়ে। 

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার (বিসিক) কক্সবাজারস্থ লবণ প্রকল্প অফিস জানায়, গেল মৌসুমে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়াসহ সাত উপজেলার উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৬০ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদনে নামেন চাষিরা। সরকারিভাবে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু প্রকৃতির বৈরি আচরণে লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। উৎপাদন হয় ১৪ লাখ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদনের ঘাটতি থাকায় সরকার বিদেশ থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টন লবণ আমদানির অনুমতি দেয় মিল মালিকদের। 
 
পেকুয়ার প্রান্তিক চাষি মোহাম্মদ আনাচ বলেন, গত মৌসুমে আমরা লবণের দাম চাহিদার চেয়ে বেশী পেয়েছি। প্রতিকেজি লবণের দাম ১০/১২ টাকা করে পেয়েছি। আমরা যাতে এ বছরও একই দাম পাই তা সরকারের কাছে দাবি জানাই।  

এ ব্যাপারে কক্সবাজরের লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের বরাত দিয়ে জানাযায় ‘নভেম্বরের শুরু থেকে লবণ উৎপাদন শুরু হলেও এখনো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র ঠিক হয়নি, তাই লক্ষ্যমাত্রা জানানোর জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।’

বিসিকের তথ্য মতে, কক্সবাজারে অর্ধলক্ষাধিক লবণ চাষি লবণের আবাদ করেন। এসব চাষি আরো অর্ধলক্ষাধিক শ্রমিক লবণ চাষাবাদের নিয়োগ করে থাকেন। ফলে লক্ষাধিক উপকূলীয় বাসিন্দা এ লবণ চাষের সাথে সরাসরি জড়িত। এছাড়া লবণ পরিবহণ, মিলিং ও বাজারজাতকরণ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত হয়ে বছরের প্রায় ৬ মাস জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। আর এসব কর্মক্ষম লোকের আয়ের উপর নির্ভরশীল ২০ থেকে ২৫ লক্ষ পোষ্যের পরম প্রত্যাশা লবণ চাষ থেকে তাদের ভরণ পোষন চলবে। আর এই প্রত্যাশার কথা ভেবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর কথায় ও কাজে আরো জনদরদী হওয়া প্রয়োজন। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত