সুদের হার কমেছে গ্রামীণ ব্যাংকে

প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০১৭, ১১:১২

সাহস ডেস্ক

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বর্তমান ব্যবস্থাপনায় গ্রামীণ ব্যাংক ব্যাপক মুনাফা অর্জন করেছে। পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে দেয়া ঋণের সুদের হারও কমানো হয়েছে। 

চলতি বছরের প্রথম ছয়মাসে দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য গঠিত এই ব্যাংকটি ১০২ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে। যদিও ব্যাংকটি ২০১৬ সালে মোট ১৩৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। 

দেশের ক্ষুদ্র ঋণদানকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক-এর সুদের হার সবরচেয়ে কম উল্লেখ করে ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রতন কুমার নাগ বলেন, ‘মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির বেঁধে দেয়া ঋণের সুদের হার সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ হলেও, আমরা বর্তমানে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ সুদ নিচ্ছি’। 

তিনি বলেন, পাশাপাশি সুদের এই হার বিভিন্ন ক্ষেত্রেও কম। উদাহরণ স্বরূপ, শিক্ষা ঋণের সুদ পাঁচ শতাংশ এবং গৃহনির্মাণ ঋণের সুদ আট শতাংশ। 

রতন কুমার নাগ বলেন, ‘এছাড়াও, ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন এবং একটি সুন্দর জীবনের লক্ষ্যে যারা সংগ্রাম করছেন তাদেরকে সুদবিহিন ঋন দিচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক।’ 

তিনি বলেন, শুধুমাত্র সুদের হার কমানোই নয়, অধিক সংখ্যাক মানুষকে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমের আওতায় আনার লক্ষ্যে নতুন নতুন খাতে ঋণদানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। 

নাগ বলেন, ‘ব্যাংকটি এ পর্যন্ত উচ্চশিক্ষার জন্য ৫২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ঋণ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে অপেক্ষাকৃত ভালো চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েটদের সহযোগিতা করতে তাদেরকে ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’ 

তিনি জানান, গ্রামাঞ্চলের যে উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রযোজন তাদেরকেও ব্যাংকটি ঋণ দিচ্ছে। 

গ্রামীণ ব্যাংক-এর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ঋণদান কার্যক্রম দ্বিগুন সম্প্রসারিত হয়েছে এবং পাশাপাশি ঋণ ছাড় দেওয়া ও আদায়ে দক্ষ নজরদারি ব্যাংকটির মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। যদিও নিন্ম আয়ের গ্রহীতাদের কল্যাণের জন্য সুদের হার কমানো হয়েছে।’ 

তিনি জানান, মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো হয়েছে এবং আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য স্কাইপি ব্যবহার করা হচ্ছে। 

তিনি আরও জানান, ২০১০ সালে গ্রামীণ ব্যাংক ৯ হাজার ৬১ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল এবং ২০১৬ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১৮ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে, ঋণ আদায়ের হার ২০১০ ছিল ৯৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৯৯ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ।

রতন কুমার নাগ জানান, গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য বা ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ৮৩ লাখ ৪১ হাজার এবং এই সংখ্যা ২০১৬ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮৯ লাখ দুই হাজার। এছাড়াও অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ লক্ষণীয়ভাবে কমে চলতি বছরের জুন মাসে শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬ সালে এই হার ছিল শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ছিল দুই শতাংশ। 

দেশের সকল গ্রামকে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে উল্লেখ করে ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘মুনাফা, ঋণ ছাড় ও আদায় এবং সুবিধাভোগীর সংখ্যাসহ ব্যাংকের সব সূচকই ধীরে ধীরে বাড়ছে।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত