স্বাস্থ্য খাত ৫১ কোটি ডলাররের ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০১৭, ১০:৩৯

সাহস ডেস্ক

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন এবং সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৫১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে ৫০ কোটি ডলার ঋণ আর ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার অনুদান। বাংলাদেশী মুদ্রায় মোট অর্থের পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ১২০ কোটি টাকা। চতুর্থ স্বাস্থ্য ও পুষ্টি খাত কর্মসূচির (এইচপিএনএসপি) মাধ্যমে এ অর্থ দিচ্ছে বহুজাতিক দাতা সংস্থাটি।

সোমবার ঢাকায় এনইসি সম্মেলনকক্ষে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে এ সংক্রান্ত দুটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান চিমিয়াও ফান নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইতোমধ্যে ১৪ দশমিক ৭ বিলিয়র ডলার বা ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকার কর্মসূচিটি সরকারের সর্বোচ্চ সংস্থা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পেয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য,মা ও শিশু স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, প্রজনন সেবা, পুষ্টি সেবাসহ স্বাস্থ্য খাতের ১৯৯৮ সালে শুরু হয় এ কর্মসূচি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের মোট সাতটি প্রতিষ্ঠান আগামী ৫ বছরের জন্য বিশাল এ কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করবে।

এর আগের কর্মসূচিতে উন্নয়ন সহযোগিদের অর্থায়ন সরকারি অর্থায়নের তুলনায় বেশি থাকলেও এবার তা কমে গেছে। এ কর্মসূচিতে সরকারি তহবিল থেকে অনুন্নয়ন ব্যয় ৭২ হাজার কোটি টাকা আর উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে হয়েছে ২৫ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। সরকারি তহবিল এবং দাতাদের অর্থায়ন থেকে নতুন এইচপিএনএসপিতে ৪৪ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা (৩৮ শতাংশ) উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে।
কর্মসূচির বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ২৭২ কোটি টাকা বা ২৪৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার যা প্রস্তাতি ব্যয়ের মাত্র ১৭ শতাংশ। বিশ্বব্যাংক, ডিএফআইডি, জাইকা, ইকেএন, জিআইজেড, কেএফডব্লিও, কেওআইসিএ, এসআইডিএ, ইউএসএআইডি, আইডিএ, ডাব্লিউএচইও, ইউএনআইসিইএফ, ইউএনএফপি ও ইউএনএআইডি এসব উন্নয়ন সহযোগিদের কাছে থেকে এ অর্থ আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তার বক্তব্যে বলেন, স্বাস্থ্যখাতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে কাজ করছে সরকার। বিশেষ করে এই খাতে প্রতিটি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া আছে। এরপরও ন্যূনতম অভিযোগ পাওয়া গেলে তা খতিয়ে দেখে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

চিমিয়াও ফান বলেন, স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশে জন্ম হার বেড়েছে। অন্যান্য দাতা সংস্থার সঙ্গে বিশ্বব্যাংক স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সরকারকে সহয়তা করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের বিনিয়োগ যে কোন দেশের জন্য সবচেয়ে ভাল বিনিয়োগ। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতের সরকারি ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলার ঋণের অর্থ ৬ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এ ঋণের উত্তোলিত অর্থের ওপর শূন্য দশিমিক ৭৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত