সিরাজগঞ্জে কাপড় বাজারে ধস, বিপাকে তাঁত মালিকরা

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:১৯

সোহাগ লুৎফুল কবির

সিরাজগঞ্জে কাপড়ের পাইকারি বাজারে ধস নেমেছে। বাজারে কাপড়ের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় তাঁত মালিকরা উৎপাদিত লুঙ্গি ও গ্রে কাপড় বিক্রি করতে পারছেন না। উৎপাদিত কাপড় বিক্রি না হওয়ায় জমতে জমতে মালিকদের গুদাম ভরে গেছে।

পাইকারি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ছোট কারখানা মালিকের গুদাম কাপড়ের মজুদ উপচে পড়ার মতো হয়েছে। পাইকারি ক্রেতারা কাপড় কিনতে হাট-বাজারে আসছেন না। এমনই অভিযোগ করলেন তাঁত মালিকরা।

এদিকে শত শত পাওয়ারলুম কারখানা মালিক উৎপাদিত কোটি কোটি টাকার মজুদ কাপড় নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। এ অবস্থায় পাওয়ারলুম মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, সিরাগঞ্জের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, তামাই, রান্ধুনীবাড়ী, সুবর্ণসারা, শাহপুর, দেলুয়া, চালা, জিধুরী, মুকুন্দগাঁতী, চন্দনগাঁতী, বানিয়াগাঁতী, শেরনগর, ক্ষিদ্রমাটিয়া, কামারপাড়া, বওড়া, মবুপুর, কল্যাণপুর, দৌলতপুর, ধুকুরিয়াবেড়া, সাতলাঠি, খুকনী, রূপনাই, আটারদাগ, গোপালপুর, গোপিনাথপুর, শিবপুর, খুকনী, এনায়েতপুর, বেতিলসহ প্রায় ১৫ সহস্রাধিক পাওয়ারলুম কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় প্রায় ২০ হাজার মেশিন রয়েছে। প্রায় এক লাখ ২০ হাজার শ্রমিক এসব কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

কারখানা মালিকরা জানান, কয়েক বছর পূর্বে এসব কারখানা এলাকায় ছিল জমজমাট পরিবেশ। কিন্তু কৃষকের উৎপাদিত ধান ও গমে লোকসান হয়েছে। কৃষিনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতিতে মন্দাভাব বিরাজ করছে। ফলে দেশের বাজারে কাপড় বিক্রি একেবারেই কমে গেছে।

সিরাগঞ্জের শাহজাদপুর, এনায়েতপুর, বেলকুচি ও করোটিয়া প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০০ কোটি টাকার কাপড় বেচাকেনা হতো। যা বর্তমানে অর্ধেকে নেমে এসেছে। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে ভারতে প্রায় ১০ কোটি টাকার লুঙ্গি ও গ্রে কাপড় রফতানি হতো। ভারতের বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় কাপড়ের রফতানিও কমে গেছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে গ্রে কাপড়ের দাম। এই কাপড়ের দাম উৎপাদন খরচের নিচে নেমে গেছে।

তাঁত মালিক নাসির উদ্দিন মুন্সী বলেন, এক থান গ্রে কাপড় উৎপাদন ব্যয় হয় ৭০০ টাকা। বর্তমানে এক থান কাপড় বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কিংবা তার চেয়ে কম দামে। কাপড়ের বৈদেশিক বাজার সংকুচিত হয়ে পড়ায় প্রভাব পড়েছে সিরাজগঞ্জের পাওয়ারলুম সেক্টরে।

তাঁত মালিক হাজী জহুরুল ইসলাম বলেন, গত ২ মাসে উৎপাদিত কাপড় বিক্রি করতে না পেরে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন। ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে শ্রমিকদের বেতন দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় কারখানার মালিকরা বিপদের সম্মুখীন হবে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত