কোরবানীর পশুর দাম যাই হোক খাজনা ১০০ টাকা

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৬:৫৮

মোঃ রাজু খান

ঝালকাঠি জেলার ৪ উপজেলার শতাধিক পয়েন্টে বসেছে কোরবানী পশুর হাট। সেই সাথে স্থল ও নৌপথে এসছে ভারত থেকে আমদানী করা অস্ট্রেলিয়ান গরু।

পারিবারিকভাবে পালন করা দেশী গরু নিয়ে আসছে কৃষকরা। তবে প্রতিবছরের মত এবছরও দেশি মাঝারী গরুর প্রতি ক্রেতাদের চাহিদা বেশি। নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা তৎপরতা রয়েছে। জাল টাকার ব্যবহার রোধে শনাক্ত করতে উল্লেখযোগ্য প্রতিটি পশুর হাটে থাকছে একজন করে ব্যাংক কর্মকর্তা। জেলায় কয়েকদিন পূর্ব থেকে শুরু হওয়া পশুর হাট চলবে মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত। সদর উপজেলার গাবখান ধানসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এবারে বসেছে নতুন হাট। 

বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন এ হাটে বিভিন্ন সাইজের গরু ও ছাগল বিক্রি হচ্ছে। দেশী ও উন্নত জাতের বিভিন্ন সাইজের এবং দামের পশুর সমারোহ রয়েছে এখানে। তবে এখানে বিশেষত্ব বিষয় হলো পশুর দাম যাই হোকে খাজনা মাত্র ১শ টাকা। 

গাবখান ধানসিড়ি ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাকির হোসেন জানান, কোরবানী উপলক্ষে এবছর এখানে নতুন হাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু মাত্র হাটের খরচ পোষাতে ১শ টাকা করে রাখা হয়। 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, স্থলপথে ট্রাকে করে এবং নৌপথে ট্রলারের করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা গরু নিয়ে এসেছে। হাটের বেচা-বিক্রি বাড়াতে আকর্ষণীয় ভাষণে মাইকে প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে। বাগেরহাট জেলার চিতলমারী এলাকার পাইকাররা প্রতিবছরের মত এ বছরও শহরের গুরুধাম পশুর হাটে গরু ও ছাগল নিয়ে এসেছে। স্থানীয়দের সহায়তায় পাইকাররা খড়-কুটা, কুড়া, খৈল, ভূষি ও ঘাস খাইয়ে দেশি প্রযুক্তিতে গরু সতেজ ও মোটাতাজা করছেন। ক্রেতারা হাটে এসে দর-দাম দেখে পছন্দ অনুযায়ী ক্রয় করছে বলে জানান পাইকাররা। 

হাট দেখতে আসা এনামুল আহসান কাজল বলেন, কোন প্রসাধনী কিংবা বস্ত্র ক্রয়ে ক্রেতাদের চাহিদা থাকে বিদেশী পণ্যে। কিন্তু মাংসের ক্ষেত্রে বাজারে গিয়ে খাঁটি দেশপ্রেম নিয়ে দেশীটাই খোঁজে ক্রেতারা। দেশীয় প্রাণির মতো সবার মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হলে বাংলাদেশ আরো উন্নতি লাভ করবে। 

ছিনতাই ও পকেটমার চক্র থেকে রক্ষা পেতে ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতাও রয়েছে। অপরদিকে জাল নোট চক্র যাতে পাইকার কিংবা বিক্রেতাদের ধোকা দিতে না পারে এজন্য প্রতিটি হাটে একজন ব্যাংক কর্মকর্তা সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করছেন। গুরুধাম কোরবানীর পশুর হাটে জাল নোট শনাক্ত করতে সোনালী, অগ্রণী, ন্যাশনাল ও জনতা ব্যাংকের অস্থায়ী বুথ রয়েছে। 

সোনালী ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার (ক্যাশ) মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, জাল টাকা শনাক্ত করতে মেশিন নিয়ে দায়িত্ব পালন করছি। কোন পাইকার, ক্রেতা বা যে কারো সন্দেহ হলে এখানে নিয়ে আসে চেক করতে। মেশিনে টাকা রেখে আলো জ্বালিয়ে দিলে আসল টাকা হলে চিক চিক করে। জাল টাকা হলে সাধারণ কাগজের মতো দেখা যাবে।   

পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আরজ আলী বলেন, সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করছি। কোন বিশৃঙ্খলা হলে কাউকে কোন রকমেরই ছাড় দেওয়া হবে না। 

গুরুধাম পশুর হাটের ইজারাদার রিপন মল্লিক বলেন, হাট কমিটি ও স্থানীয়রা সার্বিকভাবে শৃঙ্খলার দিক তদারকি করবেন। কোন রকম ব্যত্যয় হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হবে। এছাড়া পাইকারদের থাকা ও খাবারের জন্য স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা রয়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত